ভোলায় জুলাই বিপ্লবে শহীদ পরিবারের পাশে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস

ভোলায় জুলাই বিপ্লবে শহীদ পরিবারের পাশে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ভোলায় পুলিশের গুলিতে জসিম উদ্দিন মারা গেছেন। তার মৃত্যুর দায় ভোলার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহিদুজ্জামানকে নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই জসিম ভাইসহ আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে আরো যাঁরা রক্তাক্ত হয়েছে তাদের দায়ও এসপি, পুলিশ অফিসার এবং কনস্টেবলদের নিতে হবে। কোন পুলিশ কর্মকর্তা এই খুনের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তাদের শাস্তি যেন শুধুমাত্র বদলি না হয়।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকালে দ্বীপজেলা ভোলায় জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের জনমত তৈরিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণসংযোগের অংশ হিসেবে ভোলা শহরে লিফলেট বিতরণ ও পথসভায় যোগ দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম এ কথা বলেন। সরকার পতনের আন্দোলনে এই দ্বীপের মানুষ সবচেয়ে বেশি শহীদ হয়েছে উল্লেখ করে সারজীস বলেন, আমরা মনে করি ওই ঢাকা শহর থেকে দুরত্ব কখনোই প্রায়োরিটি নির্ধারণ করতে পারে না। প্রায়োরিটি নির্ধারণ করে কার কতটুকু ত্যাগ আছে, তার উপর। সেই ত্যাগে বাংলাদেশের প্রথম সারির একটি জেলা হচ্ছে ‘বীরের’ জেলা এই ভোলা।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণ একটি নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া শাসনের অধীনে চরম জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তাই বাংলার মানুষ হাতে হাত রেখে বাংলার মাটি থেকে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে লড়াই করে বিদায় করেছে। সেজন্য সরকারকে ২৪’র অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রে সবার আগে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচার দেখতে চায় বাংলার জনগন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, খুনি হাসিনাসহ যাদের নির্দেশে এতো মানুষকে খুন করা হয়েছে, রক্ত জড়ানো হয়েছে, তাদের বিচারের শাস্তির স্পষ্ট কথা এই ঘোষণাপত্রে থাকতে হবে। আমরা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলেছি, তারা একাত্মতা প্রকাশ করে আমাদের ৭ দফা দাবিকে যৌক্তিক বলে জানিয়েছেন।

এর আগে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে ভোলা বাংলা স্কুল মোড়, সদর রোড, নতুন বাজার এলাকায় ঘোষণা পত্র ও ৭ দফা দাবিতে লিফলেট বিতরণ করেন। পরে সরকারি স্কুল সংলগ্ন ইলিশা ফোয়ারা মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন।

এর আগে তিনি ভোলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ জসিম উদ্দিন এর পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করে সহানুভূতি জানান এবং তার কবর জিয়ারত করেন। কর্মসূচিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সহ-সমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ, সমন্বয়ক এম এ সাঈদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুর রহমান তুহিন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন ফয়সাল, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারসহ ভোলার শত শত সমন্বয়ক, শিক্ষার্থী-জনতা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গেল ৪ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আনদোলন চলাকালে ভোলা শহরের নতুন বাজার এলাকায় পুলিশের গুলিতে ছাতা কারিগর জসিম উদ্দিন নিহত হয়েছেন বলে তার পরিবার দাবি করছেন।