মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের কারওয়ান বাজার অংশ চালু
মগবাজার-মৌচাক সমন্বিত ফ্লাইওভার প্রকল্পের এফডিসি মোড় থেকে কারওয়ান বাজারের অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।
বুধবার সকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ফ্লাইওভারের এই অংশের উদ্বোধন করেন।
বিজিএমইএ ভবন ও সোনারগাঁও হোটেলের মধ্যবর্তী ফ্লাইওভারের শুরুর অংশে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এসময় স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী শ্যামা প্রসাদ অধিকারী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ও ফ্লাইওভারের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এমসিসিসি-তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনের পরই এই অংশে যানবাহন চলাচল শুরু করে।
মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশরারফ হোসেন বলেন, মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওভারের যে অংশের কাজ বাকি আছে তা জুনের মধ্যেই শেষ হবে। এর মধ্য দিয়ে এই এলাকার যানজট নিরসন হবে।
তিনি বলেন, ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ করতে গেলে জায়গা লাগে ৬০ মিটার। কিন্তু ২০ মিটারের মধ্যে কাজ করতে হয়েছে। এ কারণে মানুষকে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, ধাপে ধাপে ব্যয় ও সময় বাড়ানো মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার মেগা প্রকল্পের বাকি অংশের নির্মাণ কাজ শেষ হবে আগামী জুনে। এরপর আর একদিন সময়ও বৃদ্ধি করবে না সরকার। সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের আগেই এ প্রকল্পের কার্যক্রম শেষ করতে দৃড় প্রতিজ্ঞ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।
এ প্রসঙ্গে মগবাজার-মৌচাক সমন্বিত ফ্লাইওভার প্রকল্পের পরিচালক সুশান্ত কুমার পাল গতকাল বলেন, আগামীকাল (আজ) মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের কারওয়ান বাজার অংশ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা দেয়া হবে। এরপর এই ফ্লাইওভার প্রকল্পের বাকি অংশ আগামী জুনের মধ্যে উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এরপর আর কোনো সময় বৃদ্ধি করা হবে না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১১ সালের ৮ মার্চ একনেক এই প্রকল্প অনুমোদন করে। প্রথমে প্রকল্পের আকার ছিল ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি একনেক সভায় প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করে ১ হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় উত্তীর্ণ করা হয়। ধাপে ধাপে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তিনটি উৎস থেকে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করা হয়েছে, এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করেছে ৪৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ৭৭৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে সউদী ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি)।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ফ্লাইওভার প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। এই ফ্লাইওভার প্রকল্পটি ঢাকা শহরের স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানের (এসটিপি) অন্তর্ভুক্ত।
মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার প্রকল্প তিনটি প্যাকেজে ভাগ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্যাকেজগুলো হল- ডব্লিউ-৪, ৫ ও ৬। তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে সোনারগাঁও লেভেল ক্রসিং হয়ে মগবাজার হোলি ফ্যামিলি পর্যন্ত অংশ প্যাকেজ-ডব্লিউ-৪, শান্তিনগর থেকে মালিবাগ, রাজারবাগ, মৌচাক হয়ে রামপুরা পর্যন্ত অংশ প্যাকেজ-৫ এবং বাংলামোটর থেকে মগবাজার হয়ে মৌচাক পর্যন্ত অংশ প্যাকেজ-৬।
আর এই ফ্লাইওভার প্রকল্পের আওতায় ৩টি রেল ক্রসিং-সোনারগাঁও, মগবাজার ও মালিবাগ এবং ৮টি মোড়-সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, ওয়ারলেস গেইট, মৌাচাক, মালিবাগ, রামপুরা ও শান্তিনগর অতিক্রম করেছে।
পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এ সকল পয়েন্টের যানজট নিরসনের ফলে ওই এলাকা দিয়ে চলাচলকারীরা ভাল সুবিধা পাবেন। চারলেন বিশিষ্ট এই ফ্লাইওভার সোনারগাঁও রেলক্রসিংয়ের জন্য ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেয়ে মোট দৈর্ঘ্য হয়েছে ৮. ৭০ কিলোমিটার। লেভেল ক্রসিংয়ের জন্য সর্বনিম্ন হেডরুম ৭.২ মিটার এবং সড়কে ৫.৫ মিটার রাখা হয়েছে। ঊঠা-নামার জন্য রাখা হয়েছে ১৫টি র্যাম।
প্রসঙ্গত : গত বছরের ৩০ মার্চ মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের সাতরাস্তা থেকে হলিফ্যামিলি অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এই ফ্লাইওভারের ইস্কাটন অংশের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন