মঠবাড়িয়ার গুলিশাখালী মৌজায় জমি জরিপ স্থগিত : জমির মালিকদের ক্ষোভ

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড গুলিশাখালী মৌজার জমি জরিপ স্থগিত করা হয়েছে। জরিপ শুরু হয়ে রহস্যজনক কারনে হঠাৎ স্থগিত করায় প্রকৃত জমির মালিকরা পড়েছে বিপাকে। অন্যদিকে এ সুযোগে ভুয়া কাগজপত্র এবং জবর দখলের মালিকরা জরিপ কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে মাঠ পর্চা তৈরা করার চেষ্টা করছে।

জানা গেছে, গত মে মাসের ৫ তারিখ থেকে জুন মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত গুলিশাখালী মৌজার মাঠ পর্চা প্রদান করেন মঠবাড়িয়া সেটেলমেন্ট অফিসের সার্ভেয়ার ফিরোজ হোসেন। সোমবার (২৬ জুন) মৌজাটি সাময়িক স্থগিত ঘোষনা করা হয়। তবে জমির মালিকগণ বিষয়টি আগেভাগে জানতে না পেরে এদিনও অফিসে ভীড় জমায়। ভূমিদস্যুদের কথায় জমি জরিপের কাজ বন্ধ রাখলে সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধনসহ ভূমি মন্ত্রনালয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথাও জানান ভুক্তভোগীরা।

ওই মৌজার জমির মালিকদের অভিযোগ, মাঠ পর্চা বিতরন বন্ধ করার জন্য যারা আবেদন করেছেন তাদের অধিকাংশেরই এই মৌজায় জমি নেই। একজন প্রভাবশালীর কথায় তারা আবেদন করেছেন। সাধারন মানুষ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম ঝনোর অনেক জমিজমা রয়েছে। দখলীকৃত সব জমির সঠিক কাগজপত্র নেই। এজন্য তিনি নিজেও জরিপ কাজ স্থগিতের আবেদন করেছেন এবং তার শুভাকাঙ্ক্ষী লোকজন দিয়েও আবেদন করিয়েছেন। জরিপ স্থগিত হওয়ায় চেয়ারম্যানের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল হয়েছে বলে ধারনা অনেকেরই।

গুলিশাখালী মৌজার জরিপ স্থগিত করতে মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহমেদকেও বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছে একটি মহল। তারা দিনে উপজেলা চেয়ারম্যানের পাশে থাকেন আর রাতে তার ভিন্নমতের লোকের সাথে কথা বলেন। এই মহলটি চেয়ারম্যান ঝনোর ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার জন্য জরিপ স্থগিত চাওয়ার আবেদনে উপজেলা চেয়ারম্যানের সুপারিশ নিতে সক্ষম হয়েছে। এ নিয়ে গুলিশাখালী এলাকায় চলছে নান আলোচনা ও সমালোচনা।

মঠবাড়িয়া উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসার বিনোধ বিহারী ত্রিপুরা জানান, গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম ঝনোসহ শতাধিক লোকের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাঠ পর্চা বিতরন সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এলাকার লোকজন কৃষি কাজে ব্যস্ত থাকে। তাই এ সময় জরিপ কাজ বন্ধ রাখা প্রয়োজন বলে তারা আবেদনে উল্লেখ করেছেন। ওই আবেদনে উপজেলা চেয়ারম্যানেরও সুপারিশ রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাইয়ুম জানান,বিষয়টি আপনার মাধ্যমে অবগত হলাম। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।