মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সচিবরা মোবাইল ফোন কেনার জন্য পাচ্ছেন অর্ধলক্ষ টাকা

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুত করা খসড়া নীতিমালায় রয়েছে, মোবাইল ফোন কেনার জন্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সচিবদের জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকছে ৫০ হাজার টাকা। তবে এই টাকা একবারই পাবেন একজন। এসব মোবাইল ফোনে টেলিটকের ইন্টারনেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

সচিব সভায় উত্থাপনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে ‘সরকারি টেলিফোন ও ইন্টারনেট নীতিমালা-২০১৭‌‌’। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান রবিবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান।

নীতিমালায় বলা হয়েছে— মোবাইল সেট কেনার জন্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব, সচিব ও ভারপ্রাপ্ত সচিব সরকারি ব্যয়ে একবার অনধিক ৫০ হাজার টাকা পাবেন। সরকারি ব্যয়ে কেনা মোবাইল ফোনে যে কোনও প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন মন্ত্রী-সচিবরা। তবে অগ্রাধিকার দিতে হবে বিটিসিএলের ইন্টারনেট সংযোগকে। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের মোবাইল ফোন বিল (ইন্টারনেটসহ) পরিশোধ করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে মোবাইল সেট কেনার সুযোগ পাচ্ছেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সচিবরা। এর আগেও সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করা মোবাইল ফোনের ভাতা দেওয়া হতো। তবে নতুন নীতিমালায় বাড়ানো হয়েছে ভাতা।

নতুন নীতিমালায় প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা থেকে থানা নির্বাহী কর্মকর্তারা সরকারি খরচে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। যুগ্ম-সচিব থেকে উর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তা ইন্টারনেটসহ মোবাইল ফোনের জন্য আড়াই হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। এক হাজার টাকা করে পাবেন উপ-সচিবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মোবাইল ফোনের ভাতা পাবেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তির একান্ত সচিব এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব, সচিব, ভারপ্রাপ্ত সচিবের একান্ত সচিব। এছাড়া এ সুবিধার আওতায় থাকছেন প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরসঙ্গী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কর্মকর্তা, যুগ্ম-সচিব বা উর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তা, সরকারি প্রতিনিধি দলের সদস্য, সরকারিভাবে বিদেশ সফরকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, একান্ত সচিব-১, একান্ত সচিব-২ এবং রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গী হিসেবে রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের যুগ্ম-সচিব বা এর উর্ধ্বের কর্মকর্তা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসার, উপজেলা কৃষি অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও মোবাইল ফোনের ভাতা পাবেন।

নতুন নীতিমালায় সরকারি ব্যয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী মন্ত্রী-সচিবরা পাবেন ইন্টারন্যাশনাল রোমিং সুবিধাও। এবারই প্রথম এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এছাড়াও আছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন অফিসার, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, অডিট জেনারেল, দুর্নীতি দমন কমিশনার, প্রধান তথ্য কমিশনার, তথ্য কমিশনার, বিধিবদ্ধ সংস্থার চেয়ারম্যান ও সদস্য, পুলিশ মহাপরিদর্শক, গ্রেড ওয়ানভুক্ত কর্মকর্তা, অতিরিক্ত সচিব, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিদেশের বাংলাদেশ মিশন ও উইং প্রধান, অধিদফতর, দফতর ও সংস্থা প্রধান, বিভাগীয় কমিশনার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, জেলা ও দায়রা জজ, মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত যুগ্ম-সচিব, যুগ্ম-প্রধান, উপ-সচিব, উপ-প্রধান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মহাপরিচালক, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, যুগ্ম-জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং চতুর্থ গ্রেড ও এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।