ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সড়কের উপর ঘর নির্মাণ, ১০ গ্রামের মানুষের চলাচলে ভোগান্তি

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে এক সড়কের উপর ঘর নির্মাণ করায় ভোগান্তিতে পড়েছে ১০ গ্রামের মানুষ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের উজান কাশিয়ারচর এলাকায়। ঘর নির্মাণে এলাকার লোকজন বাধা দিলে তিনি তা শুনেননি। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে জনতা সামনে প্রতিবাদ করলে, দখলদার দম্ভোক্তি করে বলেন,‘আগে পারছি না,অহন আমার জায়গায় ঘর করছি বাধা দিবো কেডা?’

স্থানীয় সুত্র ও লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উজান কাশিয়ারচর গ্রামের কেচুর মোড় এলাকায় রয়েছে একটি ত্রিমুখি ব্যস্ততম সড়ক। তার মধ্যে একটি সড়ক চলে গেছে সরকারিভাবে তৈরি করা আবাসন প্রকল্পের দিকে। সেখানে রয়েছে ৭১টি পরিবার।

এছাড়াও এই সড়ক দিয়ে ১০টি গ্রামের লোকজন বিশেষ করে ভাংনামারি, খোদাবক্সপুর, ভাটিপাড়া, খেলার আলগী, ভোলার আলগী, নাওভাঙ্গা, ঈশ্বরগঞ্জের তারুন্দিয়া ও কোণা পাড়ার লোকজন নিয়মিত চলাচল ছাড়াও বেশ কিছু যানবাহনও চলাচল করে। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উৎপাদিত পণ্য এই সড়ক দিয়েই স্থানীয় বাজার ছাড়াও শহরের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যান।

অন্যদিকে প্রয়োজনীয় সকল কর্মকান্ড সারতে এই সড়কটি ব্যবহার করে আসছেন। বিশেষ করে জেলা শহর ময়মনসিংহে এই সড়ক দিয়ে যেতে হয়। এমতাবস্থায় জনৈক কলিম উদ্দিন (৫৫) নামে এক ব্যক্তি সড়কটির প্রবেশ পথের অধিকাংশ জায়গা দখল করে একটি ঘর তৈরি করেন। ফলে এখন আর এই সড়কটি লোকজন স্বাচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারছে না।

এ অবস্থায় বাড়ির কিনারা ঘেষে বা বাড়ির ভিতর দিয়ে কোনো মতে চলাচল করছেন। প্রয়োজনীয় যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দখলদার ওই কলিম উদ্দিন হচ্ছেন ওই এলাকার মৃত আমির উদ্দিন মুন্সির ছেলে। ওই সড়কের দুই পাশেই তাঁর নিজস্ব জমি থাকায় সড়কটির অধিকাংশই তিনি নিজের বলে দাবি করছেন, এমনকি প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার কারও কথা তিনি শুনছেন না।

স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, এই সড়কটি ৩০-৪০ বছর পূর্বে নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকার লোকজন এই সড়কটি দিয়ে চলাচল ও পণ্য পরিবহন করে। এই রাস্তার সংযোগস্থল থেকে সরকারি আবাসন প্রকল্পে ৬-৭ বছর পূর্বে একটি রাস্তা নির্মাণ করে আবাসন প্রকল্প চালু করেছে।

কিন্তু ঈদের পর থেকে কলিম উদ্দিন এই রাস্তার মোড়ে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। আমরা নিষেধ করলেও তিনি তা শুনেননি, উল্টো তিনি এলাকাবাসীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছেন।

জানতে চাইলে কলিম উদ্দিন বলেন, এই সড়কটির বেশীরভাগই আমার জমি। আগের সরকারের লোকজন বিশেষ করে মেম্বার চেয়ারম্যান আমার জায়গা দিয়েই সড়ক করেছিল। পরে অনেকেই জানেন এটা সরকারি সড়ক, আসলে তা না। এখন আমার জমি আমার দখলে নিছি। সরকার চাইলে আমি আমার জায়গা ছেড়ে দিবো।’

এ বিষয়ে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম সাজ্জাদুল হাসান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করতে।