মাটির উর্বরতা ও উপযুক্ত ব্যবহারে গবেষণায় প্রাধান্য: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, মাটির উর্বরতা রক্ষা ও প্রয়োজন উপযোগী ব্যবহার নিশ্চিত করতে গবেষণায় প্রাধান্য দিতে হবে। এজন্য বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা দিয়ে, গবেষণালব্ধ জ্ঞান দিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে হবে। শুধু কৃত্রিম সার ব্যবহার করে বছরে একটার পর একটা ফসল উৎপাদনের দিকে ধাবিত হলে হবে না।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস ২০২০ উপলক্ষে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), সয়েল সায়েন্স সোসাইটি অভ্ বাংলাদেশ এবং প্র্যাকটিকাল এ্যাকশন বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত সেমিনার, শোকেসিং এবং সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিধান কুমার ভান্ডারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জুম প্লাটফর্মে সংযুক্ত ছিলেন কৃষি মন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম।
সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, মৎস্য সম্পদের ব্যাপক উৎপাদনের ক্ষেত্রে পানির নিচে থাকা মাটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সে মাটিতে পরিপূর্ণ ও যথাযথ উপাদান না থাকলে সমুদ্র, জলাশয় বা নদীতে মৎস্য সম্পদ বা শৈবালের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। কাজেই মাটির জৈবিক অবস্থা টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনীয়তা কৃষি, মৎস্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রে রয়েছে। প্রাণিসম্পদের সাথেও মাটির উর্বরতা এবং উপযোগিতা খুবই প্রণিধানযোগ্য। মাটির উর্বরতা বা জৈবিক অবস্থা ভালো না থাকলে ঘাস বা অন্যান্য প্রাণিখাদ্য উৎপাদন ভালো হবে না। যার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে প্রাণিসম্পদের যে ব্যাপক বিস্তার হয়েছে সেটা স্তিমিত হয়ে যাবে। তাই ব্যাপক পরিসরে মাটির প্রয়োজনীয়তা আছে।
বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদের অসাধারণ একটি ভান্ডার উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, এ ভান্ডার রক্ষা করতে হলে আমাদের মৌলিক জায়গায় ফিরে যেতে হবে। সে জায়গা হলো আমাদের জলবায়ু, পানি ও মাটি। কোন মাটিতে কোন ফসল উৎপাদন করা যায়, কোন মাটিতে কোন সার ব্যবহার করলে মাটির জৈবিক অবস্থান ধ্বংস হয়ে যাবে বা কোন মাটিকে কিভাবে ব্যবহার করলে তার স্বাভাবিকতা নষ্ট হবে না। কিন্তু ব্যবহার উপযোগী থাকবে-এ বিষয়গুলোতে ব্যাপকভাবে গবেষণা করতে হবে। সম্মিলিতভাবে আমাদের মাটি ও পানি রক্ষা করতে হবে। মাটির ভেতরে থাকা অনুজীবকে রক্ষা করতে হবে। এভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। অপ্রতিরোধ্য গতি নিয়ে যে বাংলাদেশকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে নিয়ে চলেছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, মৃত্তিকা বিজ্ঞানীগণ ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে অনুষ্ঠান স্থলে বিভিন্ন শোকেসিং স্টল ঘুরে দেখেন মন্ত্রী।
পরে অনুষ্ঠানের কারিগরি অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তিনি। এসময় একজন কৃষক, একজন শিক্ষক ও একজন মৃত্তিকা বিজ্ঞানীর হাতে সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২০ তুলে দেন মন্ত্রী।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন