মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে ধর্মীয় অনুশাসন গুরুত্বপূর্ণ : নাজিমউদ্দিন আল আজাদ
মাদকমুক্ত সমাজ গঠন করতে চাইলে অবশ্যই ধর্মীয় অনুশাসন ব্যক্তি ও সমাজের মধ্যে জাগরিত করতে হবে বলে মন্তব্য করে সাবেক মন্ত্রী এম. নাজিম উদ্দিন আল-আজাদ বলেন, যেসব বস্তু সেবনে উন্মত্ততা সৃষ্টি হয় ও বুদ্ধিকে আচ্ছন্ন করে ফেলে অথবা বোধশক্তির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে, পরিভাষায় সেগুলোকে মাদকদ্রব্য বলা হয়। ইসলাম সব ধরনের মাদকতা তথা নেশাদ্রব্য হারাম ঘোষণা করেছে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক নেশাদ্রব্যই মদ, আর যাবতীয় মদই হারাম।’
শুক্রবার (২৫ জুন) রাজধানীর কচি-কাঁচা মিলনায়তনে শেরে-বাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদ আয়োজিত “মাদকের ভয়াল থাবা থেকে যুব সমাজকে রক্ষায় আমাদের করণীয়”-শীর্ষক আলোচনা সভা ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মাদকের ভয়ংকর থাবায় আজ বিশ্বব্যাপী বিপন্ন মানবসভ্যতা। এর সর্বনাশা মরণ ছোবলে জাতি আজ অকালে ধ্বংস হয়ে যচ্ছে। ভেঙে পড়ছে অসংখ্য পরিবার। বিঘ্নিত হচ্ছে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা। ব্যাহত হচ্ছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন। বৃদ্ধি পাচ্ছে চোরাচালানসহ মানবতাবিধ্বংসী অসংখ্য অপরাধ।
সংগঠনের উপদেষ্টা ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব আর কে রিপনের সঞ্চালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বক্তব্য রাখেন ভাষা সৈনিক মঞ্জুরুল হক সিকদার, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সাধারন সম্পাদক লায়ন মজিবুর রহমান হাওলাদার, সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ গোলাম ফারুক, অধ্যক্ষ কামরুল ইসলাম, সাংবাদিক ফরিদ খান, এডভোকেট আল আমিন হোসেন বিপ্লব, অগ্রগামী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক গোলাম ফারুক মজনু, কাউন্সিালার শাহিনা আক্তার সাথী প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, মাদকাসক্তরা শুধু নিজেদের মেধা এবং জীবনীশক্তিই ধ্বংস করছে না, তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলাও বিঘ্নিত করছে নানাভাবে। যেসব পরিবারের সদস্য নেশাগ্রস্ত হয়েছে, সেসব পরিবারের দুর্দশা অন্তহীন। জীবনবিধ্বংসী মরণনেশার কবলে পড়ে অসংখ্য তরুণের সম্ভাবনাময় জীবন নিঃশেষিত হচ্ছে। মাদকাসক্তি আসলে নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির বিবেক-বুদ্ধি, বিচারক্ষমতা, নৈতিকতা, মূল্যবোধ, ব্যক্তিত্ব, আদর্শ সবকিছুকে খেয়ে ফেলে। তাই মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা এখনই প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, মাদকাসক্তি একটি জঘন্য সামাজিক ব্যাধি, তাই জনগণের সামাজিক আন্দোলন, গণসচেতনতা ও সক্রিয় প্রতিরোধের মাধ্যমে এর প্রতিকার করা সম্ভব। যার যার ঘরে পিতা-মাতা থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাড়া, মহল্লা বা এলাকায় মাদকদ্রব্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ঘৃণা প্রকাশের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকদ্রব্যের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তুলতে নিয়মিত সভা-সমিতি, সেমিনার, কর্মশালার আয়োজন করতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় বিধিবিধান-সম্পর্কিত শিক্ষামূলক ক্লাস নিতে হবে। মাদকদ্রব্য উৎপাদন, চোরাচালান, ব্যবহার, বিক্রয় প্রভৃতি বিষয়ে প্রচলিত আইনের বাস্তব প্রয়োগ ও কঠোর বিধান কার্যকর নিশ্চিত করতে হবে। মাদকাশক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের আইনী ক্ষমতা দেয়া প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে শিশু সংগঠক লায়ন মজিবুর রহমান হাওলাদার, শিক্ষায় অধ্যক্ষ গোলাম ফারুক, অধ্যক্ষ কামরুল ইসলাম, মাদক বিরোধী আন্দোলনে এডভোকেট আল আমিন হোসেন বিপ্লব, সমাজসেবায় কাউন্সিালার শাহিনা আক্তার সাথীসহ ১০জনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন