মাদারীপুরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশুশ্রমিক

যে নরম হাতে বই নিয়ে যাবার কথা স্কুলে, আর সেই হাতেই লোহার যন্ত্রপাতির লারাচারা করা হচ্ছে, আবার দেখা যাচ্ছে গাড়ি চালাচ্ছে, বিভিন্ন দোকানে কাজ করছে. এই কাজগুলো শিশুদের দিয়ে করানো হচ্ছে। মাদারীপুরে দিন দিন শিশুশ্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছুতেই ধামানো যাচ্ছে না এ কাজগুলো থেকে শিশুদের। জেলার পাঁচটি উপজেলাতেই এ শিুশু শ্রমিক দেখতে পাওয়া যায়। প্রশাসন থেকে বিভিন্ন উদ্যোগে নেওয়া সত্তেও এর লাগাম টেনে ধরতে পারচ্ছেনা।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন গত বছর ৩১ ডিসেম্বর ফেসবুক লাইভ এসে শিশুশ্রম একেবারে বন্ধের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বলে ছিলেন এবং পরবর্তীতে তা গ্রহণ করেছিলেন।

দেশের আইনে শিশুশ্রম একেইবারেই নিষিদ্ধ। আইনে আছে ১৪ বছরের নীচে কোন শিশুদের দিয়ে কাজ করানো যাবে না। শ্রমআইনটি ২০০৬ সালের পরবর্তীতে ২০১৮ সালে সংশোধন করা হয়েছিল। এতে বলা হয়েছে ১৪ বছরের নীচের বাচ্চারা হচ্ছে শিশু তাদেরকে কারখান, ইটেরভাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোন কাজে নিয়োগ করা হলে এটি একটি অপরাধ তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল কোর্র্টের আইন অনুযায়ী শাস্তির বিধান রয়েছে।

এক পরিসংখ্যানে উঠে আসছে, জেলার বিভিন্ন গ্রামের দরিদ্র, দিনমজুর, গরীব ও মধ্যবিত্তের পরিবার থেকে আসা প্রায় ৯ হাজার শিশু অভাবের তাড়নায় তাদের বাবা-মারা উপজেলা ও জেলা শহরের কলরাখানা, হোটেল-রেস্তেরা ও ইটেরভাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সামান্য বেতনে ও পেটে ভাতে কাজে দিয়েছেন।

জানা যায়, মাদারীপুর জেলায় প্রায় ৫৯টি ইটেরভাটায় প্রতিটিতে প্রায় ২০০ শ্রমিক রয়েছে যারমধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ জন শিশু শ্রমিক আছে। এছাড়া শহর এলাকার প্রতিটি হোটেলে ২-৩ জন শিশু শ্রমিক আছে এদের মধ্যে কেউ সামান্য মজুরি পায় আর বেশিরভাগ কাজ করে পেটেভাতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাড় ভাংগা পরিশ্রম করে।
এভাবে মাদারীপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিভিন্ন ওয়ার্কসপ ও গ্যারেজগুলোতে একইভাবে শিশুরা কেউ পেটেভাতে কেউ নাম মাএ বেতনে কঠিন পরিশ্রম করছে।

এদিকে করোনা মহামারির করণে শিশুশ্রম অনেকটায় বেড়ে গেছে, যার প্রভাব মাদারীপুরে পড়েছে।
এদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু শ্রমিকের হাতে পায়ের বিভিন্ন রোগে ভুকছে। মালিক পক্ষ থেকে শিশু শ্রমিকদের অসুখ বিসুখ চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা না নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এখানেই থেমে নেই এই শিশুশ্রম।

মাদারীপুরে দিনেদিনে বেড়েই চলছে এই শিশুশ্রম। এখনি না থামালে দিনদিন এ শিশুশ্রম আরোও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে যা নতুন প্রজন্মের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিবে।

গ্যারেজের শিশু শ্রমিক জামাল বলেন, দোকানে কাজের কোন বেতন দেওয়া হয় না, এখানে আমি কাজ শিখছি।

গ্যারেজের মালিক রহমানা বলেন, আমার দোকানে এর কাজ করে তাদের কোন বেতন দেওয়া হয় না। তার এখানে কাজ শিখছে।

থেমে যাবে এই শিশুশ্রম মাদারীপুর হবে শিশু শ্রমিক মুক্ত এই আশা মাদারীপুরবাসির। তারা যাবে স্কুলে সেখানে করবে লেখাপড়া তাদের কাউকেই শিশু শ্রমিক হিসেবে চিনবেনা এমনটি প্রত্যাশা।