মাদারীপুরে হামলায় দোকান-বসতঘর ভাঙচুর-লুটপাট

মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই এলাকার দ্বন্দ্ব অন্য এলাকায় বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) রাত ৯টার দিকে পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের শের-ই বাংলা ক্লাবে ১৩টি দোকান ও ৪টি বসতবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পৌরসভার পশ্চিম খাগদী এলাকার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ঘটমাঝি ব্যাপারীপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম খাগদী এলাকার হেদায়েত হাওলাদার (১৮) নামে এক তরুণ তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে ঘটমাঝি ব্যাপারীপাড়া এলাকায় গিয়ে ব্যাপারীপাড়া এলাকার রাজীব ব্যাপারীসহ কয়েকজন তরুণের সাথে হেদায়েতের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা হয়।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই ঘটমাঝি ব্যাপারীপাড়া এলাকার তরুণ ও কিশোররা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পশ্চিম খাগদী এলাকায় মহড়া দিয়ে ফেরার পথে তারা শের-ই বাংলা ক্লাব এলাকার ১৩টি দোকান ও ৪টি বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় হামলাকারীদের বাঁধা দিতে আসা পাঁচজন আহত হন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে সদর থানা পুলিশ পরিদর্শন করে গেছেন। এদিকে এ ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকায় এখন উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকানি শাহাদাৎ ফকির বলেন, ঘটমাঝি এলাকার রাজীব ব্যাপারী, মিলন ব্যাপারী, নসু চাপরাশি, মেহেদী ব্যাপারী, সাব্বির ব্যাপারী, সোহাগ ব্যাপারীসহ ২০ থেকে ২৫ জন এসে আমার দোকানে এলোপাথারি কোপানো শুরু করে। আমার দোকানে বিকাশের টাকা, মোবাইল ও কম্পিউটার যা ছিল সব ভেঙেচুরে লুটপাট করে নিয়ে যায়। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
হামলার ক্ষতিগ্রস্ত আলী হাওলাদার বলেন, হামলাকারীরা আমার নতুন ঘরের সব কয়টি জানালার গøাস ইট মেরে ভেঙে ফেলেছে। ঘরের বৈদুতিক মিটার পর্যন্ত ভেঙে দিয়েছে। অথচ এই এলাকায় আমার নতুন বাড়ি। আমার সঙ্গে কারো কোন বিরোধ নাই। তবুও হামলার শিকার হলাম। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিচার চাই, ক্ষতিপূরণ চাই।
শিউলী সাহা নামে আরেক ক্ষতিগ্রস্ত বলেন, আমরা নিরীহ মানুষ। দোকান যেভাবে কুপিয়েছে তাতে কিছু আর বাকি নেই। ভাঙচুর করে ওরা সব লুট করে নিয়ে গেছে। আমাদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। খুব অসহায় অবস্থায় আছি আমরা।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে ব্যাপারীপাড়া এলাকার রাজীব ব্যাপারী বলেন, পশ্চিম খাগদী এলাকার লোকজন আমাদের ওপর আগে হামলা চালায়। এ কারণে আমাদের এলাকার লোকজন ওদের ধাওয়া করে। তবে ভাঙচুর ও লুটপাটের বিষয়ে আমি জড়িত নই।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, দুই এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিরোধ হলেও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্য এলাকার লোকজন। যারা দোকানপাট ও বসতঘরে হামলা চালায় ওরা সবাই তরুণ ও কিশোর। তাদের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে।