মার্কিন মিত্রদের ভাঙতেই মধ্যপ্রাচ্যে সংকট, হোতা রাশিয়া : এফবিআই

রুশ হ্যাকাররা কাতারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর মিথ্যা সংবাদ প্রচার করায় মধ্যপ্রাচ্যের সংকট তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করছেন মার্কিন তদন্তকারীরা। তদন্তের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময় মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেন, রুশ হ্যাকারদের এ ধরনের সাইবার অপরাধের কারণে উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মাঝে সংকট দেখা দিয়েছে।

কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, কাতারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম হ্যাকিংয়ের ঘটনা তদন্তে সেদেশের সরকারকে সহায়তার লক্ষ্যে সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগশনের (এফবিআই) একটি দল দোহা সফর করেছে।

মার্কিন গোয়েন্দাদের প্রাপ্ত তথ্যে দুই সপ্তাহ আগে কাতারের ওই সংবাদমাধ্যমে রুশ হ্যাকাররা অনুপ্রবেশ করেছিল বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র কাতারেই সবচেয়ে বেশি সৈন্য রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। কাতারি সংবাদমাধ্যম হ্যাকিংয়ের এ ঘটনা মার্কিন গোয়েন্দা ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

তাদের আশঙ্কা, মার্কিন মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে একই ধরনের সাইবার হামলার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে পারে রাশিয়া। মার্কিন গোয়েন্দাদের বিশ্বাস, ২০১৬ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও একই ধরনের হ্যাকিংয়ের তথ্য তারা পেয়েছিল।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের মধ্যে ফাঁটল ধরানোই রাশিয়ার উদ্দেশ্য হতে পারে বলে আপাতদৃষ্টে ধারণা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সন্দেহভাজন রুশ সাইবার কার্যক্রমের মাধ্যমে ফরাসি নির্বাচনের সময় ও জার্মানি এবং অন্যান্য দেশে ভূয়া সংবাদ ছড়ানো তৎপরতা দেখা গেছে।

এদিকে কাতারের গণমাধ্যম হ্যাকিংয়ের ঘটনায় রুশ অপরাধী সংগঠনগুলো জড়িত বলে ওয়াশিংটন যে দাবি করেছে সেবিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। এর আগে মার্কিন নির্বাচনে রুশ হ্যাকারদের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

তবে এ বিষয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিঅাই এবং সিআইএ মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত কাতার দূতাবাসের এক মুখপাত্র বলেছেন, তদন্ত চলছে। শিগগিরই এ তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

কাতার সরকার বলছে, গত ২৩ মে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ইরানের প্রতি সমর্থন জানিয়ে কাতার আমিরের যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে তা মিথ্যা। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল-থানি সিএনএন’কে বলেন, এফবিআই হ্যাকিং এবং ভূয়া সংবাদ পরিবেশনের তথ্য নিশ্চিত করেছে।

তিনি বলেন, কাতারের বিরুদ্ধে ভুল তথ্যের ওপর সব অভিযোগ আনা হয়েছে। আর এই ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই পুরো সংকট তৈরি হয়েছে। কারণ এটি ভুয়া সংবাদের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। যা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আমাদের গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে; এফবিআই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।