মার্চের মধ্যে নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি
আগামী মার্চের মধ্যে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির লক্ষ্যে কাজ চলছে। আবেদন যাচাইবাছাই এবং কতগুলো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা যাবে তার হিসাব কষছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, কতগুলো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে তা নির্ভর করছে মোট বরাদ্দের ওপর। নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আড়াইশ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এই অর্থ দিয়ে যতগুলো প্রতিষ্ঠান করা যায়, ততগুলোই প্রতিষ্ঠানই বাছাই করে ঘোষণা করা হবে।
তথ্য অনুযায়ী, এবার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির খাতে এ বছর বরাদ্দ রয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্কুল ও কলেজের জন্য ২০০ কোটি এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ৫০ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ অর্থ দিয়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৬০০ থেকে ৭০০ প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা যেতে পারে। অথচ আবেদন করেছে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে ২০১৯ এমপিওভুক্ত করার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাতে এ খাতের ৪২৫ কোটি টাকা অব্যয়িত ছিল। এবার সেই অর্থ এ বছরের বরাদ্দ ২৫০ কোটি টাকার সঙ্গে যোগ করা হতে পারে। তাই এবার অন্তত ৬৭৫ কোটি টাকা নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও খাতে ব্যয় করা হতে পারে।
গত বছরের ১০ অক্টোবর থেকে এমপিওভুক্ত (মাম্হলি পেমেন্ট অর্ডার বা এমপিও) করতে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হয়। ৩১ অক্টোবর তা শেষ হয়। স্কুল, কলেজ, কারিগরি ও মাদ্রাসার জন্য এমপিও পেতে সারা দেশের ৮ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। এর মধ্যে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাড়ে ৬ হাজার।
এমপিও পেতে আবেদন করা স্কুল-কলেজগুলো বাছাইয়ে ৯ সদস্যের কমিটি কাজ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফৌজিয়া জাফরীন বলেন, ‘আশা করছি, মার্চের মধ্যেই নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করা হবে। সে লক্ষ্যেই কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।’ তবে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মার্চের মধ্যে চেষ্টা চলছে। কোনোভাবে ঐ সময়ের মধ্যে শেষ করতে না পারলে যেভাবে হোক অন্তত ঈদের আগেই দেওয়া হবে।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর ২ হাজার ৭৩০টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল। তার মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) ৪৩৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি) ১০৮টি ছিল। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণি স্তরের প্রতিষ্ঠান ৮৮৭টি, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৮টি, কলেজ (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি) ৯৩টি এবং ডিগ্রি কলেজ ৫৬টি এমপিওভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া মাদ্রাসা ছিল ৫৫৭টি। তার আগে ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রতিটি ডিগ্রি কলেজ এমপিওভুক্ত করতে বছরে সরকারের ব্যয় হয় ৬৯ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের জন্য লাগে ৬৮ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা, আর নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাগে ১৫ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫০ টাকা।
বর্তমানে সারা দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৮ হাজার ৯১০টি। এর মধ্যে স্কুল ১৮ হাজার ১৯৭টি, কলেজ ২ হাজার ৩৬৫টি, মাদ্রাসা ৭ হাজার ৬১৮টি। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বাবদ সরকার প্রতি মাসে ৯৪১ কোটি ৫০ লাখ ২৪ হাজার ৭১১ টাকা ব্যয় করছে।
বর্তমানে এমপিওভুক্ত হওয়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে মাসে বেতনের মূল অংশ ও ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া আর ৫০০ টাকা চিকিত্সা ভাতা পেয়ে থাকেন। এর বাইরে দুই ঈদে শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ আর কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ উত্সব ভাতা পান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন