‘মুক্তামনির হাতে আরো ছয়টি অস্ত্রোপচার লাগবে’
বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনির সুস্থ হতে তার হাতে আরো ছয়টি অস্ত্রোপচার করা লাগবে বলে জানিয়েছেন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক ডা. সামন্ত লাল সেন।
শনিবার (১২ আগস্ট) সকালে অপারেশনের পর পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি ও বার্ন ইউনিটের পরিচালক ডা. আবুল কালাম।
সকাল ৯টার দিকে মুক্তামনির অস্ত্রোপচার শুরু হয়। সোয়া দুই ঘণ্টার চেষ্টা শেষে সোয়া ১১টায় সাংবাদিকদের জানানো হয় অস্ত্রোপচার শেষ। ২০ জন চিকিৎসকের একটি দল অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচার করে তার হাত থেকে তিন কেজি মাংসপিণ্ড ফেলে দেয়া হয়েছে। এগুলো পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
ডা. সামন্ত লাল বলেন, ‘অপারেশন সফল হয়েছে। মুক্তামনি ভালো আছে। তার হাতের ডিজিজ পোরশন (রোগাক্রান্ত অংশ) কেটে ফেলতে আমরা সক্ষম হয়েছি। তবে এক অপারেশনেই এটা শেষ হবে না। আরো অন্তত ছয়টি অপারেশন করা লাগবে। তার জ্ঞান ফিরেছে, কথা বলেছে। এ সাফল্য আমাদের একার না। বার্ন ইউনিটসহ জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউ (এনআইসিভিডি) এর সমন্বিত সফলতা এটা। তার হাত ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। প্রাথমিক সাফল্য বললেও এটা এখানেই শেষ নয়। ইটস লং ওয়ে টু গো।’
ঝুঁকি ও রক্তক্ষরণের আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঝুঁকিমুক্ত কখনোই বলা যাবে না। ডেফিনেটলি ঝুঁকি কমে এসেছে। ভয় রয়েছে কিনা-জানতে চাইলে বার্ন ইউনিটের পরিচালক ডা. আবুল কালাম বলেন, ‘ডেফিনেটলি আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তার হাতের বেশিরভাগ অংশটুকু ফেলে দিয়েছি। আপনারাও জানেন ওর শরীরের বেশ কিছু অংশে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। সেগুলো আমরা রিমুভ করবো। আমরা এটুকু বলতে পারি, হাতের রোগাক্রান্ত যেটুকু অংশ ফেলে দিয়েছি সেখানে আর এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
মুক্তামনি কেমন আছে এ প্রশ্নের জবাবে ডা. আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা যতটা প্রত্যাশা করেছিলাম মুক্তামনি তার থেকেও ভালো আছে। তবে সে ঝুঁকিমুক্ত না। অন্তত ৫-৬ সপ্তাহ সে আমাদের অবজারভেশননে থাকবে।’
গত মঙ্গলবার সকালে মুক্তামনির চিকিৎসার জন্য গঠিত ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তার বায়োপসি রিপোর্ট পর্যালোচনা করে। এর পরই অস্ত্রোপচারের এ দিন ধার্য করা হয়।
গত ১২ জুলাই বিরল রোগ নিয়ে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি হয় সাতক্ষীরার মুক্তামনি। পরীক্ষা করে রোগটি লিমফেটিক ম্যালফরমেশন বলে শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা। এ রোগে তার এক হাত ফুলে গিয়ে দেহের চেয়েও ভারী হয়ে গেছে। সাদা রঙের শত শত পোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই ফুলে যাওয়া অংশে। চার বছর ধরে এই ‘বোঝা’ বয়ে বেড়াচ্ছে ১১ বছরের ছোট্ট শিশুটি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন