মুখোমুখি রাশিয়া-ইউক্রেন : সামরিক শক্তিতে কে কত এগিয়ে
ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনায় পারদ ঢেলে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী দু’টি অঞ্চলকে স্বাধীন ঘোষণার মাধ্যমে ইউক্রেন ঘিরে এই উত্তেজনায় তীব্র উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।। পূর্ব-ইউরোপের এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছে; যা নিয়ে দেখা দিয়েছে বিশ্বজুড়ে তীব্র উদ্বেগ।
প্রতিবেশী দুই দেশের সামরিক সক্ষমতা কেমন, কার চেয়ে কে এগিয়ে- অনেকের মনে এখন এমন প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে।
আয়তনে ইউরোপের বৃহত্তম রাষ্ট্র রাশিয়ার সাথে প্রতিবেশী দেশ এবং ওই অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ ইউক্রেনের উত্তেজনা এখন আর দুই দেশের মাঝে থেমে নেই। এতে যুক্ত হয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো এবং অন্যান্যরা। ইউক্রেন আয়তনে দ্বিতীয় বৃহত্তম হলেও দেশটি সামরিক সক্ষমতায় যে রাশিয়ার চেয়ে পিছিয়ে আছে, সেটি আশ্চর্যজনক কিছু নয়।
বৈশ্বিক পরিসংখ্যানবিষয়ক সংস্থা স্ট্যাটিসটা একটি ইনফোগ্রাফি তৈরি করেছে। যেখানে রাশিয়ার সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনীর সক্ষমতার সঙ্গে প্রতিপক্ষ ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতার তুলনা করা হয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার সামরিক বাহিনীর সাড়ে ৮ লাখ সক্রিয় সৈন্য নিয়ে গর্ব করেন। অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কির সৈন্য সংখ্যা রাশিয়ার তুলনায় যোজন যোজন দূরে; মাত্র ২ লাখ।
রাশিয়ার বিমান বাহিনীর ৪ হাজারের বেশি সামরিক বিমান রয়েছে; যেখানে ইউক্রেনের আছে ৩২০টিরও কম। রুশ নৌবাহিনীর বহরে রণতরী এবং সামরিক জাহাজের সংখ্যা ৬০৫ হলেও প্রতিপক্ষ ইউক্রেনের সেই সংখ্যা মাত্র ৩৮।
বৈশ্বিক সামরিক সক্ষমতা সূচক প্রকাশকারী সংস্থা গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার ১৫টি ডেস্ট্রয়ার রয়েছে; যা যেকোনও মুহূর্তে যুদ্ধে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত। আর এক্ষেত্রে একেবারে অন্ধকারে রয়েছে ইউক্রেন। কারণ দেশটির হাতে একটি ডেস্ট্রয়ারও নেই।
ইউক্রেন আয়তনে দ্বিতীয় বৃহত্তম হলেও দেশটি সামরিক সক্ষমতায় যে রাশিয়ার চেয়ে পিছিয়ে আছে সেটি আশ্চর্যজনক কিছু নয়
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার বলছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর কাছে এই মুহূর্তে ট্যাংক রয়েছে ১২ হাজার ৪২০টি। অন্যদিকে, ইউক্রেনের ট্যাংকের সংখ্যা ২ হাজার ৫৯৬টি। রুশ সামরিক যুদ্ধবিমান আছে ৭৭২টি; যেখানে ইউক্রেনের রয়েছে মাত্র ৬৯টি।
এছাড়া রাশিয়ার রণতরী রয়েছে ১১টি এবং ইউক্রেনের মাত্র ১টি। রুশ সাঁজোয়া যানের সংখ্যা ৩০ হাজার ১২২ হলেও ইউক্রেনের আছে মাত্র ১২ হাজার ৩০৩। রাশিয়ার অ্যাটাক হেলিক্প্টারের সংখ্যা ৫৪৪ এবং ইউক্রেনের মাত্র ৩৪।
কিছুদিন আগে বিশ্বের ১৪০টি দেশের সামরিক সক্ষমতা বিচারে গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স-২০২২ প্রকাশিত হয়েছে। চলতি বছরের এই সূচকে বরাবরের মতো বিশ্বে সামরিক সক্ষমতায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে রাশিয়া, চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন, পাকিস্তান ও ব্রাজিল।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউরোপে যুদ্ধ চান না বলে গত সপ্তাহের মঙ্গলবার ঘোষণা দেন এবং ইউক্রেন সীমান্ত থেকে কিছু সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলেও ক্রেমলিন জানায়। কিন্তু পশ্চিমারা রুশ প্রেসিডেন্টের এই দাবি নিয়ে সন্দিহান এবং যার বাস্তব চিত্র এখন প্রকাশিত হচ্ছে।
সোমবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী দুই অঞ্চল দনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে স্বাধীন ঘোষণার পর সেখানে শান্তি রক্ষায় রাশিয়ার সৈন্য মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন। সূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন