মৃত্যুকালে কোথায় ছিল আইয়ুব বাচ্চুর পরিবার?
চলে গেলেন আইয়ুব বাচ্চু। দুই সন্তান, মেয়ে ফায়রুজ সাফা অস্ট্রেলিয়া ও ছেলে তাজওয়ার কানাডায় থাকেন। মৃত্যুকালে বাচ্চুর পাশে কেউ ছিলেন না। স্ত্রী চন্দনাও সন্তানদের কাছে বিদেশে বেশিরভাগ সময় কাটান। ফলশ্রুতিতে আইয়ুব বাচ্চু একাকি জীবন কাটাতেন। বাইরে থেকে মানুষ না বুঝলেও এখন শোনা যাচ্ছে তিনি কতটা অসুস্থ ছিলেন। গান নিয়ে থাকতেন, সময় পেলে ছুটে যেতেন সন্তানদের কাছে।
শুধু আইয়ুব বাচ্চু নয়, বাংলাদেশের একাধিক শিল্পী ও কবি একাকিত্বে ভোগেন। হয়তো বাবা মা মুখ ফুটে বলতে পারে না তুই সব ছেড়ে আমার কাছে চলে আয়। কিন্তু দরকার কী তাদের হয় না? মন কাঁদে না?
বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা খ্যাত অভিনেতা আনোয়ার হোসেনের জীবনে। ৫ সন্তানের জনক ছিলেন। জীবনের সকল আয়, ব্যয় করেছেন সন্তানদের পেছনে। বড় ছেলে সুইডেন, বাকী ৩ ছেলে ও ১ কন্যা আমেরিকায়। একা বাসায় ধুকে ধুকে মারা গেলেন। ১টি সন্তান ও এলেন না বাবাকে দেখতে। জীবনের শেষ বেলাতেও অভিনয় করতে হয়েছে পেটের তাগিদে।
দিলারা জামানের বড় মেয়ে তানিরা, আমেরিকায় থাকেনে পেশায় ডাক্তার। ছোট মেয়ে যোবায়রা কানাডায় রয়েছে। যোবায়রা পেশায় আইনজীবী। স্বামী চলে গিয়েছেন পরপারে। এখন একাকিত্বের জীবন। কেমন কাটান সেই জীবন? বললেন দিলারা জামান, ‘মাঝেমধ্যেই আমি খুবই ডিপ্রেশনে ভুগি। সে জন্যই অভিনয় করে চলছি। কাজের মধ্যে থাকলেই সব কিছু ভুলে থাকি। যখন ঘরে আসি তখন আবার একাকীত্ব ধরে বসে। মনে হয় আমার কিছুই করার নেই! বিরাট একটা শূণ্যতা জেঁকে ধরে বসে। তখন মনকে আশ্বাস দিই এটাই স্বাভাবিক। আর আমার নিজের কাজ নিজেকেই সব করতে হয়। আমি বাসার জন্য কাজের লোক রাখি না। যতদিন শরীরে শক্তি আছে ততদিনই করে যাব। আর এখনকার সময় নিজের নিরাপত্তার কথাসহ সবকিছুই মাথায় রেখে চলতে হয়। স্বাভাবিক জীবনযাপন করেই মরতে চাই, অপঘাতে নয়। পড়াশোনা করি। কিছুটা মানুষ ও সমাজের জন্য কাজ করার চেষ্টাও করি।’
২ সন্তানের জনক সাহসী কবি আল মাহমুদ। বনানীর বাড়ী বিক্রী করে সন্তানদের বিদেশে পাঠান। আর ফিরে আসেনি আদরের দুলালেরা। কবি আজ একা বিছানায় পড়ে রয়েছেন। দেখার কেউ নেই। এক সময় চলে যাবেন না ফেরার দেশে।
রাইসুল ইসলাম আসাদের বছরের প্রায় অর্ধেক সময়ই আমেরিকায় থাকতে হয়। কারণ সেখানে তার স্ত্রী তাহিরা দিল আফরোজ ও একমাত্র মেয়ে ডা: রুবায়না জামান থাকেন। তাই স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাতে প্রায় সময়ই রাইসুল ইসলাম আসাদকে আমেরিকায় যেতে হয়। কিন্তু মন তো টেকে না। ফিরে আসতে হয় বাংলাদেশে, অভিনয়ের মঞ্চে।
ববিতার একমাত্র ছেলে অনিক কানাডাতে পড়াশুনা শেষ করে সেখানেই স্থায়ী। দেশে খুব কম আসা হয়। ববিতার বিয়ে হয়েছিল ব্যবসায়ী ইফতেখারের সঙ্গে। সেই বিয়ে টিকেছিল মাত্র দুই বছর। ববিতা একা থাকেন। মাঝেমধ্যে ছেলের কাছে গিয়ে থাকেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন