মেয়েকে ধর্ষণ, বাবার যাবজ্জীবন
শেরপুর: নিজের কিশোরী মেয়েকে (১৫) ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বাবা হানিফ উদ্দিনকে (৪৩) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে শেরপুর শিশু আদালতের বিচারক (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় হানিফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সাজাপ্রাপ্ত হানিফ সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের ধোপাঘাট হদিপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, হানিফ উদ্দিনের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে ধর্ষণের শিকার কিশোরী বড় মেয়ে। সে স্থানীয় একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। হানিফ জুয়ার নেশায় আসক্ত। তার স্ত্রী ছাগল পালন করে সংসার চালান। একদিন রাতে হানিফ হঠাৎ করে নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করেন। এরপর প্রায় রাতেই ভয় দেখিয়ে ওই কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করতেন বাবা।
কিন্তু বিষয়টি কিশোরীর মা টের পাননি। এমনকি মেয়েটিও লোকলজ্জার ভয়ে তার মা বা অন্য কাউকে বিষয়টি জানাননি। সর্বশেষ গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর আবারো মেয়েকে ধর্ষণ করেন হানিফ। এতে ওই কিশোরী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি তার মাকে জানালে, কিশোরীর মা প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পুলিশকে জানান।
এরপর পুলিশ গত বছরের ২০ অক্টোবর মা ও ওই কিশোরীকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন বাদী হয়ে স্বামী হানিফের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সদর থানায় মামলা করেন কিশোরীর মা। পরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মুমিনুন্নিছা খানমের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ২২ ধারায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর জবানবন্দি নিয়ে গাজীপুরের কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে নিরাপদ হেফাজতে রাখা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ গত বছরের ২৫ অক্টোবর জামালপুর থেকে হানিফকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে হানিফ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জীবন চন্দ্র বর্মণ হানিফ উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সব সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালত নিজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা হানিফকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও বিশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি মো. গোলাম কিবরিয়া। তিনি বলেন, তাঁরা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। তবে, আদালতে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন