মোদির কাছে ‘যৌনদাসী’র চিঠি!
বিশ্বজুড়ে সাড়ে চার কোটি মহিলা বর্তমানে যৌনদাসী। এর মধ্যে ভারতের একাধিক যৌনপল্লিকেই নিজের ভবিষ্যতের ঠিকানা বলে বেছে নিয়েছেন ১.৮ কোটি।
তাদের মধ্যে অনেকেই আবার নাবালিকা। Global Slavery Index এ তথ্য জানিয়েছে। তভিও তাদের মতই একজন কিশোরী ছিল, যখন সে বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। অভাবের তাড়নায় পাড়ার এক ‘দাদা’র হাত ধরে চাকরির খোঁজে মুম্বাইয়ে পা দিয়েছিল ১৭ বছর বয়সী সেদিনের তভি। ঘুণাক্ষরেও জানতো না যে, সেই দাদা’র তার জন্য ‘কী’ চাকরির বন্দোবস্ত করেছে! ওই দাদা।
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মুম্বাইয়ে গিয়ে চাকরি দেওয়ার পাশাপাশি তাকে বিয়ে করবে বলেও। কিন্তু মুম্বাইয়ের মাটিতে পা রাখার পরই বদলে গেল সবকিছু। হাঠাৎ চেনা পৃথিবীটা হয়ে উঠল অচেনা। চাকরি ‘কিশোরী’ তভি পেয়েছিল ঠিকই…কিন্তু তা ছিল ‘বাবু’দের খুশি করার। প্রতিদিন একবার বা দু’বার নয়, বারংবার যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল তাকে। এর ৬ বছর পর পুলিশের সাহায্যে মুম্বাইয়ের যৌনপল্লির সেই অন্ধকার কুঠুরি থেকে উদ্ধার করা হয় তাকে।
তভিদের মতো হাজার হাজার মেয়ে প্রতিদিন ভারতবর্ষের পিছিয়ে পড়া অঞ্চল থেকে হারিয়ে যায় যৌনপল্লিতে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ উপায় না দেখে নিজেদের সেই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাধ্য হয়। আবার অনেককেই ‘মানসিকভাবে যৌনদাসী’ হয়ে থাকতে হয় সেখানে।
সেদিনের সেই ‘দাদার কীর্তি’র কথা এতদিন পর যুবতী তভি মন খুলে লিখলেন আরও এক ‘দাদা’কে। দুই পাতার একটি চিঠি। লিখেছেন রাখী পূর্ণিমার দিন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্যে করে লেখা সেই চিঠির ছত্রে ছত্রে শুধুই যেন কান্না, গুমড়ে থাকা এক অসহ্য যন্ত্রণা লুকিয়ে। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ‘দাদা’ বলে সম্বোধন করে তভি লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের হাজার হাজার এলাকায় আমার মত মেয়েরা যৌনদাসীর জীবন কাটাচ্ছে। অভাবের তাড়নায়, খিদের জ্বালায় প্রতিদিনই আমরা বিক্রি হয়ে যাচ্ছি। ধর্ষিতা হচ্ছি। আপনি আমাদের বাঁচান!’
লজ্জার হলেও পরিসংখ্যান বলে, বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার যৌনপল্লিতে আটক যৌনদাসীদের মধ্যে ভারতেই সংখ্যাটা সবথেকে বেশি। সাড়ে চার কোটি যৌনদাসীর মধ্যে শুধুমাত্র ভারতেই রয়েছেন ৪০ শতাংশ।
তভি বর্তমানে মুম্বাইয়ের একটি কাপড় মিলে চাকরি করেন। চিঠিটি রাখী পূর্ণিমার দিনেই প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন এক সরকারি কর্মকর্তা। তিনি নরেন্দ্র মোদিকে জানিয়েছেন, তভিকে এই চিঠির জবাব এনে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন। সূত্র: জি নিউজ
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন