যশোরের মনিরামপুরে গৃহবধূর লা*শ উদ্ধার, শ্বশুর পলাতক

যশোরের মনিরামপুরে পরিত্যক্ত একটি ঘর থেকে জেসমিন আক্তার জোসনা (৩৫) নামের তিন সন্তানের জননীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে পরিবারের লোকজন তার লাশ উদ্ধার করেন।
পরে খবর পেয়ে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে জোসনার শ্বশুর আব্দুল মমিন দফাদার পলাতক রয়েছেন।

নিহত জেসমিন উপজেলার গোপালপুর গ্রামের রায়হান দফাদারের স্ত্রী।
এ ঘটনায় গৃহবধূর ভাই সাইফুল ইসলাম সাগর বাদী হয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা করেছেন।

সাগরের অভিযোগ- তার বোনের শ্বশুর আব্দুল মমিন বিভিন্ন সময় জোসনাকে কুপ্রস্তাব দিতেন। রাজি না হওয়ায় শ্বশুরের নির্যাতন সইতে হতো জোসনাকে। রোববার জোসনার সঙ্গে ঝগড়া করেন শ্বশুর। একপর্যায়ে মারধর করলে জোসনার মৃত্যু হয়। এরপর শ্বশুর বাড়ির লোকজন গলায় রশি জড়িয়ে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার কথা প্রচার করেছেন।

সাগর বলেন- শ্বশুরের খারাপ নজরের বিষয়ে এর আগেও জোসনা তাকে জানিয়েছেন। তখন জোসনার স্বামীর কাছে অভিযোগ করার পর কিছুদিন চুপ থাকেন শ্বশুর আব্দুল মমিন। পরে আবার একই আচরণ শুরু করেন।

জানতে চাইলে গৃহবধূর স্বামী রায়হান দফাদার বলেন- আমি মালয়েশিয়ায় কাজে গিয়েছিলাম। তখন আব্বার বিরুদ্ধে খারাপ কথা শুনে স্ত্রীকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। এক বছর আগে দেশে এসে আবার স্ত্রী সন্তানদের আমার বাড়িতে ফিরিয়ে আনি।

রায়হান দফাদার বলেন- গোপালপুর বাজারে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। রোববার দুপুরে দোকান থেকে বাড়ি ফিরে শুনি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে জোসনার ঝগড়া হয়েছে। বাড়ি ফেরার পর জোসনা আমার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। তখন আমি না খেয়ে দোকানে চলে যাই। রাত ১০টার দিকে ফিরে দেখি জোসনার রাগ কমেনি। আমি জোসনাকে বুঝিয়ে রাতের খাবার চাই। খাবার দিতে দেরি করায় আমার ঘুম এসে যায়। রাত ১২টার দিকে ঘুম ভাঙার পর দেখি জোসনা ঘরে নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পেছনে একটি পরিত্যক্ত ঘরে আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় জোসনার লাশ পাই।

রায়হান আরও বলেন- জোসনা আমার আব্বার কথা সহ্য করতে পারতেন না। এ জন্য অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে। রোববার আব্বার সঙ্গে জোসনার ঝগড়া হয়েছে। তাকে মারধর করা হয়নি। জোসনার লাশ পাওয়ার পর থেকে আব্বা কোথায় আছেন সেটা বলতে পারব না।

এ বিষয়ে মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন হোসেন মোল্যা বলেন- গৃহবধূর ঘাড়ে একটি দাগ দেখা গেছে। যা দেখে সন্দেহ হওয়ায় আমরা লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।