যুক্তরাজ্যের নতুন মন্ত্রিসভায় যারা আছেন
মাত্র একদিন আগেই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার। এরই মধ্যেই তিনি দেশটির নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করে ফেলেছেন। গত শুক্রবার (৫ জুলাই) বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লস আনুষ্ঠানিকভাবে কিয়ার স্টারমারকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে ৪১২টি আসন পেয়ে জয়ী হয়েছে লেবার পার্টি। অন্যদিকে, কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১২১টি আসন। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের মোট ৬৫০টি আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য কোনো দলকে এককভাবে পেতে হবে ৩২৬টি আসন। সে হিসেবে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে লেবার পার্টি।
জয়ী হওয়ার পর কিয়ার স্টারমার বলেছিলেন, এখন থেকে পরিবর্তন শুরু হলো। আর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার প্রথম ভাষণে স্টারমার বলেছেন, জনগণ সুচিন্তিতভাবে পরিবর্তন এবং জনগণের সেবামূলক রাজনীতির জন্য ভোট দিয়েছে। তবে দেশকে পরিবর্তন করা সুইচ চাপার মতো নয়। এর জন্য সময় প্রয়োজন হবে।
কথায় এবং কাজে মিল রেখে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পদে মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেছেন স্টারমার। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীসহ শুক্রবারই ২২ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠনের কথা জানিয়ছে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট।
দেশটির নতুন উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অ্যাঞ্জেলা রেইনাহকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে দেশটির প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হয়েছেন র্যাচেল রিভস। তাকে দেশটির চ্যান্সেলর অব দ্য এক্সচেকার (রাজকোষের চ্যান্সেলর) বা অর্থমন্ত্রী করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে ৪৫ বছর বয়সী রিভসই প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হয়েছেন।
তিনি ২০০০ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ব্যাংক অব ইংল্যান্ডে (যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক) দায়িত্ব পালন করেছেন। র্যাচেল বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথ হলো স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগ এবং সংস্কার। যুক্তরাজ্যের পাবলিক সার্ভিসের পুনর্নির্মাণে অর্থায়নের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবেন তিনি।
যুক্তরাজ্য সরকারের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী। দক্ষিণ লন্ডনে বেড়ে ওঠা র্যাচেল ২০১০ সালে লিডস ওয়েস্ট থেকে প্রথমবার সংসদ সংদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। এবার তিনি লিডস ওয়েস্ট এবং ফাডজি আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
দেশটির নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন ইয়েভেত্তে কুপার। অপরদিকে ডেভিড ল্যামিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী করা হয়েছে ওয়েস স্ট্রিটিংকে।
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন ব্রিজেট ফিলিপসন। তিনি স্টারমারের খুবই ঘনিষ্ঠ। জ্বালানিমন্ত্রী করা হয়েছে এড মিলিব্যান্ডকে। এছাড়া বিচারমন্ত্রী করা হয়েছে শাবানা মাহমুদকে। তুখোড় এই আইনজীবী অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে রাজনীতিতে এসেছেন। সাবেক কনজারভেটিভ নেত্রী লিজ ট্রাসের পর তিনিই দ্বিতীয় নারী হিসেবে এই দায়িত্ব পেলেন।
জোনাথন রেনল্ড হয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী এবং লিজ কেন্ডাল শ্রম ও কারামন্ত্রী হয়েছেন। এছাড়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী করা হয়েছে জন হিলিকে। লুইস হেইঘ হয়েছেন পরিবহনমন্ত্রী, স্টিভ রিড পরিবেশমন্ত্রী, পিটার কাইলি বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি বিষয়কমন্ত্রী এবং রিচার্ড হার্মার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। অপরদিকে লিসা ন্যান্ডিকে সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচনের ভোট শুরু হয়। ১৯৪৫ সালের পর এই প্রথম দেশটিতে জুলাই মাসে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের নির্বাচনে হেরে কনজারভেটিভ পার্টিকে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হলো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন