যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটেন-কানাডায় আশ্রয় চেয়েছেন আসিয়ার স্বামী
যুক্তরাষ্ট্র, বিট্রেন এবং কানাডার কাছে আশ্রয় চেয়েছেন ধর্ম অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবির স্বামী আসিক মাসিহ। তিনি জানান, তারা এখন পাকিস্তানে ঘোর বিপদের মধ্যে রয়েছেন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ২০১০ সালে আসিয়া বিবিকে দেয়া ফাঁসির দণ্ড চলতি সপ্তাহেই পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দেয়। হযরত মোহাম্মদকে (স.) অপমান করায় তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়।
এক ভিডিও বার্তায় আসিয়ার স্বামী মাসিহ বলেন, তিনি তার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, আমি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি যত দ্রুত সম্ভব আমাদের সহায়তা করুন এবং আমাদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করুন। তিনি কানাডা এবং ব্রিটের কাছেও সহায়তা চেয়েছেন।
অপরদিকে আসিয়ার আইনজীবী সাইফুল মালুক পাকিস্তান ছেড়ে পালিয়েছেন। গত বুধবার আদালত আসিয়া বিবির ফাঁসির আদেশ বাতিল করে দেয়ায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে নিজের জীবনের আশঙ্কায় দেশ ছেড়েছেন সাইফুল মালুক নামের।
সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পর শনিবার আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাতে আসিয়া বিবির আইনজীবী সাইফুল মালুক জানান, তিনি আর পাকিস্তানে থাকবেন না। চলতি সপ্তাহের শুরুতে সাইফুল মালুক বলেন, তিনি দেশ ছাড়বেন কারণ তাকে মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়েছে।
সাইফুল মুলুক জানিয়েছেন, তার জীবন এখন হুমকির মুখে। কিন্তু আসিয়া বিবির পক্ষে লড়ার জন্যই তার বেঁচে থাকা জরুরি এবং সে জন্যই তাকে পাকিস্তান ছাড়তে হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে মৃত্যুদণ্ড বাতিল হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তান উত্তাল হয়ে ওঠে। তেহরিক-ই লাবাইক নামের ইসলামপন্থী একটি দলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়। তাদের দাবি আসিয়া বিবির মৃত্যুদণ্ডাদেশ পুনর্বহাল করতে হবে। এর পর সরকার বিক্ষোভ থামানোর জন্য ইসলামপন্থীদের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌছায় যে, সরকার উচ্চ আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা পিটিশনের বিরোধিতা করবে না।
তা ছাড়া গ্রেফতার করা সব বিক্ষোভকারীকে মুক্তি দেয়া হবে এবং আসিয়া বিবি যেন পাকিস্তান ছাড়তে না পারেন তার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। এগুলোর বিনিময়ে টিএলপি তাদের সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ বন্ধ করতে বলবে।
আসিয়া বিবির আইনজীবী সাইফুল মুলুক সরকারের এই সমঝোতাকে বেদনাদায়ক বলে উল্লেখ করেছেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া আদেশও সরকার বাস্তবায়ন করতে পারছে না বলে আক্ষেপ করেন তিনি। এ চুক্তি আসিয়া বিবির মৃত্যুপরোয়ানা স্বাক্ষরের সামিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তবে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী সরকারের পদক্ষেপ সমর্থন করে বলেছেন, আসিয়া বিবির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবকিছুই করা হবে। এর আগে পাকিস্তানের তরফ থেকে বলা হয়েছিল যে, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকেই আসিয়া বিবি মুক্তি পাবেন। বেশ কয়েকটি দেশ তাকে আশ্রয় দেবার কথাও বলেছিল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন