যে ছবি এখনো কাঁদায়
একটি ছবি হঠাৎ বদলে দিলো ইউরোপে অভিবাসী হতে আগ্রহীদের ভাগ্য৷ তুরস্কের উপকূলে পড়ে ছিল ৩ বছরের শিশু আয়লান কুর্দির নিথর দেহ৷ মা-বাবা আর ভাইয়ের সঙ্গে সিরিয়ান শিশু আয়লানও কোবানির বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল নিরাপদ জীবনের খোঁজে৷ এভাবে চিরবিদায় নিতে হয় তাকে!
মা ও সন্তান
রেহান কুর্দির কোলে তার ছোট ছেলে আয়লান৷ কোবানির একটি বাড়িতে এখনো আছে এই ছবি, তবে ছবির দু’জন মানুষ আর নেই৷ সিরিয়া থেকে তুরস্ক হয়ে গ্রিসে যাওয়ার পথেই ফুরিয়েছে তাদের জীবন চলার পথ৷ এ খবর সারা বিশ্বকে জানিয়েছিল অন্য একটি ছবি৷
আয়লান জাগিয়ে গেল
আয়লানের ওই ছবি নাড়িয়ে দেয় বিশ্ববিবেক৷ ইউরোপে আসার পথে যেখানে হাজারো মানুষ শত বাধার মুখে এক সময় হার মানতো, প্রাণ দিতো, সেখানে ধীরে ধীরে অনেকটাই খুলে গেল ইউরোপের দ্বার৷ অভিবাসন প্রত্যাশীরা অবাধে আসতে শুরু করল মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা থেকে৷
যেভাবে বিদায় জানালো জন্মভূমি
দুই সন্তান আর স্ত্রী-কে হারিয়ে নিরাপদ জীবনের প্রতি আগ্রহহারিয়ে ফেলেন আয়লানের বাবা আব্দুল্লাহ কুর্দি৷ তাই গ্রিস হয়ে ইউরোপের উন্নত কোনো দেশে নতুন করে জীবন শুরু করার ইচ্ছে জলাঞ্জলি দিয়ে ফিরে যান সিরিয়ায়৷ তার কোবানির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় স্ত্রী ও দুই সন্তানের লাশ৷ জানাযা শেষে ওই শহরেই কবরস্থ করা হয় তাদের৷
কান্না আর আহাজারি
আব্দুল্লাহ কুর্দি তার পরিবারের সদস্যদের লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরলে কান্নার রোল উঠেছিল কোবানিতে৷ আয়লানদের জন্য কোবানি এখনো কাঁদে৷
আয়লান এখন প্রতিবাদের প্রতীক…
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে আয়লান এখন প্রতিবাদের প্রতীক৷ ইউরোপে যেখানেই অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রতিবাদ, সেখানেই থাকে আয়লানের ছবি৷ অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের এই ছবিটি প্যারিসের৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দফতরেও আয়লান
ছবির এই নারী আয়লানের আত্মীয়া, নাম ফাতিমা কুর্দি৷ ব্রাসেলসে জাতিসংঘের সদর দফতরের বাইরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে ছিলেন তিনি৷ ইউরোপের দেশগুলোতে অভিবাসন আইনের সমন্বয়ের দাবিতে আয়োজিত সেই সমাবেশেও ছিল আয়লানের ছবি৷ তবে সেই ছবি নয়, সেই ছবির আদলে হাতে আঁকা একটি ছবি দেখা যায় দেয়ালে৷ সেই ছবির পাশেই দাঁড়িয়ে ফাতিমা কুর্দি৷ ডয়চে ভেলে
আরেক আয়নাল রোহিঙ্গা শিশুটি
নিথর পড়ে থাকা এই শিশুটি আয়নাল কুর্দি নয়। এটি সিরিয়ার কোনো যুদ্ধ ক্ষেত্রের ছবি নয়। ছোট নিষ্পাপ এ ছবিটি মিয়ানমারের মুসলিম রোহিঙ্গা শিশু। জীবন বাঁচাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে পাড়ি দিয়েছিল নাফ নদীতে অজানা গন্তব্যে। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। ডুবে জীবন দিয়ে হয়তো বেঁচেই গেছে মিয়ানমারের এ আয়নাল! কিন্তু শিক্ষা দিয়ে গেছে বিশ্ব বিবেককে। ঘুমিয়ে থাকা বিবেকের কাছে রেখে গেছেন হাজারো প্রশ্ন। এভাবে কি বিপন্ন হবে মানবতা?
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বহণ করা নৌকাডুবিতে নিহত হয় শিশুটি। এরপরই ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাই সরব হলেও জেগে ওঠেনি বিশ্ব বিবেক। শিশুটি মিয়ানমার থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে পালিয়ে আসে। কিন্তু জীবন বাঁচাতে ঠাই হয়নি কোথাও। যখন পৃথিবীর কোথাও আশ্রয় নেই তখন কাদামাটিতে খুঁজে নিল এক আশ্রয়। যার নাম মৃত্যু।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন