যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
নাটোরের হয়বতপুরে যৌতুকের দাবিতে ফরহাদ হোসেন (৩২) নামে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ ও নির্যাতন চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই গৃহবধূকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে। শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার হয়বতপুর গ্রামে এ ঘটনা।
গৃহবধূর পারিবারিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ৭ বছর আাগে হয়বতপুর গ্রামের রওশন শিকদারের ছেলে ফরহাদ আলীর (৩০) সঙ্গে নলডাঙ্গা উপজেলার শিবপুর বৈদ্যবেলঘড়িয়া গ্রামের বাবু মিয়ার মেয়ে সুলতানা বৃষ্টির বিয়ে হয়।
বিয়ের পর বছর দুয়েক তাদের দাম্পত্য জীবন ভালো কাটলেও পরবর্তী সময় নেমে আসে অশান্তির কালো ছায়া।
যৌতুকের দাবিতে ওই গৃহবধূকে নানা অজুহাতে মারধর করতো তার স্বামী। কয়েকদিন আগে টাকার জন্য স্ত্রীর সঙ্গে ফের ঝগড়া-বিবাদ হয়। একপর্যায়ে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে ওই গৃহবধূর হাত-পা ও মুখ বেঁধে মারধর করে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে।
স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে তিন বছরের ছেলে আরাফাতকে সাথে নিয়ে গাজীপুরে গার্মেন্টস কর্মী মায়ের বাসায় চলে যায়। পরে ফরহাদের বাবা এবং আত্মীয়স্বজনের অনুরোধে সুলতানা বৃষ্টিকে বাবার বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়।
শুক্রবার বিকেলে বৃষ্টির বাবার বাসায় এলাকার গণ্যমান্য লোকদের উপস্থিতিতে এক সালিশ মীমাংসা অনুষ্ঠিত হয়। সালিশে ফরহাদের বাবা রওশন শিকদার পুত্রবধূকে আর মারধর বা অত্যাচার করা হবে না মর্মে অঙ্গীকার করে বৃষ্টিকে সেদিনই নিজের বাসায় নিয়ে যায়।
কিন্তু বৃষ্টি শ্বশুর বাড়িতে পৌঁছামাত্র স্বামী ফরহাদ দরজা-জানালা বন্ধ করে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত একাধিকবার মারধর করে। এছাড়া গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে প্রতিবেশীরা বিষয়টি টের পেয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় উদ্ধার করে গৃহবধূর পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। এরপর প্রতিবেশীদের সহায়তায় গৃহবধূকে নাটোর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে গৃহবধূর স্বামী ফরহাদ শিকদার জানান, আমি দাম্পত্য কলহের কারণে বকাঝকা করেছি।
মারধর করিনি। বাচ্চা নিয়ে সে চলে যাচ্ছিল। আমি বাচ্চা কেড়ে নেওয়ার সময় ধস্তাধস্তিতে সামান্য আঘাত লাগতে পারে।
লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়ার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, সালিশ মীমাংসা করে ওই গৃহবধূকে শ্বশুরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পুত্রবধূকে আর নির্যাতন করা হবে না মর্মে অঙ্গীকার করেছিলেন। পরে কি হয়েছে আমি জানি না।
নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা জহুরুল ইসলাম বাবু জানান, দরিদ্র পরিবারের সন্তান বৃষ্টি আমার প্রতিবেশী। খুব লক্ষী মেয়ে। যৌতুকের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে। এবার তাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এলাকাবাসী তার স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন