রংপুরের পীরগঞ্জে বীজ আলু সংকটে চাষিদের মাথায় হাত


রংপুরের পীরগঞ্জে বীজ আলু সংকটের কারণে আলু চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। এমনিতেই খাবার আলুর দাম বেশি। বীজ আলুর দাম প্রায় দ্বিগুন। আলু চাষের ভরা মৌসুমে বীজ সংকটের কারণে উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় জমি তৈরি করেও চাষীরা আলু চাষ করতে পারছেন না। রংপুরের পীরগঞ্জ আলু চাষে খ্যাত হলেও বীজ সংকটের কারণে যেন ‘আড়তেই ঘি মঙ্গা’র অবস্থা চলছে। আর সংকটের সুযোগ নিয়েছে বেসরকারী কিছু বীজ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানীগুলো।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, পীরগঞ্জের কৃষকেরা জমিতে বছরে তিনটি করে ফসল চাষ করছেন। ইরি-বোরো ধান চাষের আগেই অনেক জমিতে আলু, সরিষা, পেঁয়াজ চাষ করেন। এছাড়াও ৬০ থেকে ৯০ দিনের রবি ফসল আবাদ করে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারেন বলেই ব্যাপকহারে আলু চাষে ঝুঁকেছেন। আলুর পরই ইরি-বোরো ধান লাগানো সম্ভব হয়।
চলতি মওসুমে পীরগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়নে এবারে ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর (৫০ হাজার ৪২২ বিঘা) জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আলু চাষ লাভজনক হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এবার বেশি আবাদ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকমর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার। তিনি বীজ সংকট ও বেশি মুল্যের কারণে কৃষকরা শংকিত তা স্বীকার করে বলেন, আশ-পাশের উপজেলাগুলোতে আলু রোপন প্রায় শেষ। বিকল্প পন্থায় বীজ সংগ্রহ করে আলু চাষ সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ১ কেজি আলু উৎপাদনে ১০/১২ টাকা খরচ হওয়ায় কৃষকরা আলুতে মনোনিবেশ করেছে। তারা ভিত্তি বীজ, প্রত্যয়িত বীজ এবং মান ঘোষিত বীজ আলুর উপর বেশি নির্ভরশীল হচ্ছেন। কৃষকরা বীজ আলুর অতিরিক্ত মুল্যের কথা বললে আমরা ভোক্তা অধিকার এবং ইউএনও স্যারকে নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবো।
রংপুর অঞ্চলের বিএডিসি সীড মার্কেটিংয়ের উপপরিচালক মাসুদ সুলতান বলেন, ২০ নভেম্বর থেকে বিএডিসর আলু বিতরণ করা হবে। এবারে প্রতি কেজি আলু ৬৫/৬৬ টাকায় বিক্রি করা হবে।
নাম না প্রকাশের শর্তে পীরগঞ্জের কৃষিকল বীজ হিমাগার, শান্তনা কোল্ড ষ্টোরেজ, তছির উদ্দিন কোল্ড ষ্টোরেজ সহ কয়েকটি হিমাগারের আলু ব্যবসায়ী জানান, ব্র্যাক, সুপ্রীম সীডস্ এবং ওয়ান কেয়ার কোম্পানী তাদের বীজ আলু হিমাগার থেকে ট্রাকে লোড করে ডিলারদের কাছে পাঠাচ্ছে। কৃষকরা সরাসরি বীজ পাচ্ছেন না। অপরদিকে বিএডিসি’র বীজ এখনও আসেনি। যেটুকু বরাদ্দ আসে, তা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
দুরামিঠিপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন জানান, ব্র্যাকের প্রতি কেজি স্টীক এবং পাকড়ী বীজ আলু ১৩০ টাকা এবং জাম (ইন্দু কানি) ৭০ টাকা দরে কিনে আলু লাগাচ্ছি। তবে বীজ সংকট। টুকুরিয়া ইউনিয়নের চাষী শফিকুল ইসলাম বলেন, আলু আবাদের জায়গায় আলু বীজের সংকট এ যেন ‘আড়তেই ঘি মঙ্গা!

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন