রংপুরের পীরগঞ্জে সাধক কবি কাজী হেয়াত মামুদ এর ওয়াকফ এস্টেট পরিচালনায় বাধার অভিযোগ
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার অষ্টাদশ শতাব্দীর সাধক কবি কাজী হেয়াত মামুদ (রঃ) এর সমাধীস্থলসহ ওয়াকফ এস্টেট পরিচালনার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় মোতওয়াল্লী নিয়োগ প্রদান করলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ নিয়োগপ্রাপ্ত মোতওয়াল্লীকে ওয়াকফ এস্টেট পরিচালনায় বাধা প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার চৈত্রকোক ইউনিয়নের ঝাড়বিশলা গ্রামের মরহুম নুরুল হক দীর্ঘ দিন ধরে কাজী হেয়াত মামুদ ওয়াকফ এস্টেটের মোতওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালন করাবস্থায় বিগত ২০১২ সনে মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুর পর প্রায় ১০ বছর উক্ত ওয়াকফ এস্টেট মোতওয়াল্লী বিহীন ছিল। এ সময় কাজী হেয়াত মামুদ (রঃ) এর সমাধিস্থলসহ ওয়াকফ এস্টেট পরিচালনা করতেন ঝাড়বিশলা হায়াতুল উলুম আলিম মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে নিয়মানুযায়ী গত ২০২৩ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে প্রয়াত নুরুল হকের পুত্র এজাহারুল হক উক্ত ওয়াকফ এস্টেটের মোতওয়াল্লী হিসেবে নিয়োগ পেতে ঢাকাস্থ ওয়াকফ প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। যার ইসি নং- ১৪২১৮। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত ও বিধি অনুযায়ী ২৫/০৬/২৪ ইং তারিখে ১৬.০২.০০০০.০৫৬. ৩১.০০০. ৫৩.১২৬ নং স্মারকে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তানজিলা কবির স্বাক্ষরিত এক পত্রে এজাহারুল হককে ০৪/০৪/২৩ ইং হতে ৩ বছরের জন্য উক্ত এস্টেটের মোতওয়াল্লী নিযুক্ত করা হয়।
পত্রানুযায়ী এজাহারুল হক ঝাড়বিশলা মৌজার ১০৩৫ এবং ১০৩৭ দাগের জমির কাজী হেয়াত মামুদ (রঃ) এর সমাধীস্থলসহ ১একর ৯ শতক জমির মোতওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বাধার কারণে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। জানা গেছে এজাহারুল হক মোতওয়াল্লী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর মাজার সংলগ্ন ঝাড়বিশলা হায়াতুল উলুম আলিম মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষের নিকট চাবী চাইলে তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এক পর্যায়ে এজাহারুল হক ১৭ অক্টোবর’২০২৪ তারিখে এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কাগজপত্র যাচাই সাপেক্ষে প্রশাসনিক সহযোগীতা চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। পরবর্তিতে মাদ্রাসাটির তৎকালিন সভাপতি তাজিমুল ইসলাম শামীম ও মাদ্রাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহজাহান বাদশা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম এর কাছে উক্ত চাবী জিম্মায় রাখেন। এখনও উক্ত চাবী চেয়ারম্যানের হেফাজতে রয়েছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সমাধীস্থলের দানবাক্স ও সমাধী গৃহটি নিয়ে জটিলতা থাকায় মাদ্রাসার তৎকালিন সভাপতি তাজিমুল ইসলাম শামীম চাবীটি আমার জিম্মায় রেখেছেন। উক্ত চাবী এখনও আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।
এ ব্যাপারে ঝাড়বিশলা হায়াতুল উলুম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সালেক সরকার বলেন, রংপুরের বিজ্ঞ জজ আদালতে ইতিপুর্বে কাজী শামস উদ্দিন কবি হেয়াত মামুদ এর ওয়াকফ এস্টেট যার ইসি নং-১৫৪৭০ এর মোতওয়াল্লী হিসেবে নিজেকে দাবী করে মামলা করেন। মামলা নং-২৬/১৯৭৫। আদালত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে মাজারের তদারকি ও ইছালে ছওয়ার পরিচালনার আদেশ দেন। উক্ত আদেশ অনুযায়ী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব পালন করে আসছে। অপরদিকে শামস উদ্দিন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। মামলাটি বিচারাধীন।
এদিকে মোতওয়াল্লী এজহারুল হক বলেন, আমি ইসি নং ১৪২১৮ এর বৈধ দাবীদার। আমার সঙ্গে জমি নিয়ে কোন দালিলিক বিরোধ নেই। বিরোধ থাকতে পারে ১৫৪৭০ নং ইসির মোতওয়াল্লী কাজী শামস উদ্দিনে সাথে। সার্বিক এ পরস্থিতিতে এজহারুল হক কাজী হায়াত মামুদ (রঃ) এর এস্টেট পরিচালনা ও উন্নয়নের স্বার্থে মোতওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সহযোগীতার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন