রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৫৫ ভাগ
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রফতানি আয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এ সময়ে রফতানি আয় হয়েছে দুই হাজার ১৩২ কোটি ৪৯ লাখ মার্কিন ডলার। তবে রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে আছে।
অন্যদিকে, একক মাস হিসেবে সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে রফতানি আয় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ১৩৭ কোটি ৩ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে দুই হাজার ১৩২ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। আর গতবছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল দুই হাজার ১ কোটি ৩২ লাখ ডলার।
অন্যদিকে, জানুয়ারি মাসে রফতানি আয় হয়েছে ৩৪০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৪৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার। গত বছর জানুয়ারিতে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩২৯ কোটি ২২ লাখ ডলার।
প্রধান রফতানি পণ্য পোশাক খাতের আয় ধারাবাহিকভাবে ভাল হওয়ায় রফতানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের রফতানি খাত মূলত পোশাক নির্ভর। রফতানিতে পোশাক খাতের অবদান দিন দিন বাড়ছে। এর পাশাপাশি গত ২/৩ বছর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করায় রফতানি আয়ে উল্লেখ করার মত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
তিনি রফতানি আয় আরো বাড়াতে প্রচলিত বাজার ছাড়াও নতুন বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পোশাকের পাশাপাশি পণ্য বহুমূখীকরণ বিশেষ করে বেশি মূল্য সংযোজন হয় এমন পণ্য রফতানির প্রতি মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির (ইএবি) সভাপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে পোশাক খাত দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে গ্যাস-বিদ্যুৎ স্বল্পতা কাটানো সম্ভব হলে রফতানি আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য রফতানি বাড়াতে বৈচিত্র্যপূর্ণ শিল্প পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়তা ও প্রণোদনা দেয়ার সুপারিশ করেন।
ইপিবির হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, পোশাক খাতের নিট পণ্য (সোয়েটার, টি-শার্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয় ও প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দুই-ই বেড়েছে। ৮৬০ কোটি ৬১ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় দাঁড়িযেছে ৮৯০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ।গতবছরের একইসময়ে এই খাতে রফতানি ছিল ৮০৬ কোটি ৩ লাখ ডলার।
আলোচ্য সময়ে ওভেন পণ্যেও (শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ৮৫৮ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ওভেন পণ্য রফতানি হয়েছে ৮৭৪ কোটি ৮৭ লাখ ডলারের। গতবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৮৩৫ কোটি ২৯ লাখ ডলার।
জুলাই-জানুয়ারি সময়ে বড় পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে। এই খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৬ কোটি ১৮ লাখ ডলার,যার প্রবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। মাছ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে উল্লেখ করার মত। এ সময়ে ৩৫ কোটি ৩৯ লাখ ডলারের মাছ রফতানি হয়েছে। এর প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। তবে চামড়া ও চামড়জাত পণ্যের রফতানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে।
গতবছরের প্রথম সাত মাসে চামড়া ও চামড়জাত পণ্যের রফতানি ছিল ৭৪ কোটি ৩৭ লাখ ডলারের, এবারের একই সময়ে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭০ কোটি ৯৫ লাখ ডলার।
এছাড়া কৃষিজাত পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে। এ সময়ে ৩৫ কোটি ৯৯ লাখ ডলারের কৃষিজাত পণ্য রফতানি হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন