রাখাইনে ঘাস খেয়ে রোহিঙ্গাদের জীবনধারণ

মিয়ানমারের রাখাইনের সহিংসতাকবলিত এলাকাগুলোর একটি মংডু। এই শহরের উত্তর দিকে প্রধান সড়কের ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত গ্রামগুলোতে বসবাস ছিল কয়েক হাজার মানুষের।

তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনে সব গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেনাদের তাণ্ডবের ভয়াবহতায় পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা। এখনও যারা পালাতে পারেনি; সেনাদের ভয়ে তাদের বনজঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে। সেখানে ঘাস আর পানি খেয়ে বেঁচে আছে তারা।

রয়টার্স জানায়, ২০১৬ সালের অক্টোবরে সামরিক অভিযানের সময় ইউশেই কিয়া গ্রামের রোহিঙ্গারা সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলে। এবারও সেনাদের তাণ্ডবের শিকার হয়েছে গ্রামটির বাসিন্দারা। ওই গ্রামের একজন শিক্ষক রয়টার্সকে বলেছেন, ৮০০টি পরিবারের মধ্যে এখন আছে মাত্র ১০০টি।

যারা রয়ে গেছে তাদের সেনাদের সঙ্গে লুকোচুরি করে থাকতে হচ্ছে। কারণ সেনারা সকালে গ্রামে আসে। সেনারা গ্রামে এলে তারা জঙ্গলে লুকিয়ে পড়ে এবং চলে গেলে রাতে বাড়িতে ফিরে আসে।’

এই শিক্ষক বলেন, আজ সন্ধ্যায় খাওয়ার মতো কোনো খাবার নেই আমাদের। কী করার আছে? আমরা জঙ্গলের কাছাকাছি থাকি। সেখানে অনেক ঘাস রয়েছে; আমরা এটাই খাচ্ছি। এরপর একটু পানি সংগ্রহ করে পান করছি। এভাবেই বঁেচে আছি আমরা।’ ওই শিক্ষকের নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ করেনি রয়টার্স।

সেনাদের পুড়িয়ে দেয়া রোহিঙ্গা বসতবাড়িগুলোতে সৃষ্ট বিরানভূমিতে দেখা গেছে, সেখানে কয়েকশ’ গরু চষে বেড়াচ্ছে। জমিতে রোপণ করা ধানের চারা খাচ্ছে। ক্ষুধার্ত কুকুরগুলো ছোট ছোট ছাগল খাচ্ছে। এক সময় রোহিঙ্গা মুসলিমদের পদচারণায় মুখর স্থানীয় মসজিদ, বাজার ও স্কুল এখন একেবারে নীরব।