রাজধানীতে জব্দ বাসের নিচে পড়ে পুলিশ কর্মকর্তা নিহত
দুর্ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা বাস থানায় নেওয়ার সময় সেটির নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন পুলিশের একজন কর্মকর্তা। রোববার রাজধানীর মিরপুরের চিড়িয়াখানা সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত কর্মকর্তার নাম উত্তম কুমার সরকার। তিনি রূপনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই)। এটি দুর্ঘটনা না অন্য কিছু, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
উত্তম কুমারকে চাপা দেওয়া ঈগল পরিবহনের দূরপাল্লার বাসটি জব্দ করেছে পুলিশ। এর চালক বেলাল হোসেনকেও আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বেলা পৌনে চারটার দিকে রাজধানীর চিড়িয়াখানা সড়কের রাইনখোলা এলাকার ঢালে বাসের চাপায় নিহত হন উত্তম কুমার। জব্দ করা ঈগল পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব ১৪ ৬৮২৮) বাসটির সামনে মোটরসাইকেল নিয়ে থানার দিকে যাচ্ছিলেন উত্তম। তাঁর পরনে পুলিশের পোশাক ছিল। রাইনখোলা এলাকায় সড়ক কিছুটা ঢালু হয়ে নেমে গেছে। ঢালের মাঝে একটি গতিরোধক (স্পিড ব্রেকার) রয়েছে। উত্তম কুমার সেই গতিরোধক পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের গতি কমালে পেছন থেকে বাসটি এসে মোটরসাইকেলে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়েন উত্তম, একটি চাকা তাঁর শরীরের মাঝ বরাবর চলে যায়, মাথা ফেটে সড়কে রক্তক্ষরণ হতে শুরু করে। উত্তমের মোটরসাইকেলটি আটকে যায় বাসের সামনে। এই অবস্থায় বাসটি শ’খানেক গজ গিয়ে থেমে যায়। ঘটনাস্থলেই উত্তমের মৃত্যু হয়।
নিহত উত্তমের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে। দেড় মাস বয়সী একটি মেয়ের বাবা তিনি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ফল বিক্রেতা মো. শাহীন বলেন, ঘটনাস্থলেই এসআই উত্তমের শরীর নিথর হয়ে যায়। বাসটির সামনে মোটরসাইকেলটি ছিল বলে সেটি কিছু দূর গিয়ে আটকে যায়। না হলে হতাহত আরও বাড়তে পারত। এরপর তাঁরা চালককে আটক করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, দুদিন আগে মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যায়ের এক শিক্ষকের গাড়িকে ধাক্কা দেয় বাসটি। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা ব্যর্থ হওয়ায় আজ ঈগল পরিবহনের আরেক চালক বেলাল হোসেনকে দিয়ে চালিয়ে বাসটি জব্দ করে থানায় নেওয়ার সময় এটি পুলিশ কর্মকর্তাকে চাপা দেয়।
ঘটনাটি শাহ আলী থানা এলাকার। এই থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) মেহেদি হাসান বলেন, এ ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত মামলা হয়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি দুর্ঘটনা না অন্যকিছু, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত চালক বলছেন গাড়িটির ব্রেক কাজ না করায় ওই ঘটনা ঘটেছে।
তবে নিহত উত্তমের একজন সহকর্মী বলেন, মিরপুর বেড়িবাঁধে ব্রেক কাজ না করায় ঈগল পরিবহনের বাসটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিল বলেই তাঁরা শুনেছিলেন। ওই গাড়িটি রেকার ছাড়া এভাবে আনার সিদ্ধান্ত কে দিলেন, সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি করেন তিনি।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জব্দ করা বাসটি যথেষ্ট পুরোনো ও ভাঙাচোরা। এটি ঢাকা থেকে বরিশাল ও খুলনার পথে চলতো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন