রাজধানীতে পরিবহন সঙ্কট, ভোগান্তিতে মানুষ
বাসচাপায় দুই ছাত্র-ছাত্রী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে গত কয়েক দিনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে ঢাকা। আজ বৃহস্পতিবারও সকাল থেকে রাজধানীতে গণপরিবহনের সঙ্কট দেখা গেছে। কিছু গণপরিবহন চললেও সেগুলোতে যাত্রীদের উঠতে হচ্ছে ‘লড়াই’ করে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়ছেন অফিসগামী যাত্রীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরা রুটে রাইদা পরিবহন ছাড়া অল্প কিছু তুরাগ ও অনাবিল পরিবহন চলাচল করছে। এছাড়া কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে গুলিস্তান রুটে অল্প সংখ্যক বন্ধু পরিবহন ও ভিক্টর পরিবহনের দেখা যায়।
সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় যখন গাড়ি থেমে থেমে চলে, ঠিক সেই সময় রাস্তা ফাঁকা। ঠাঁই দাঁড়িয়ে রয়েছেন অফিসগামী নাগরিকরা।
এদিকে রিকশা ভাড়া কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। নতুন বাজার থেকে পল্টন পর্যন্ত ২৫০ টাকার নিচে রিকশা মিলছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল (বুধবার) থেকে সায়েদাবাদ ও মতিঝল থেকে সাভারগামী সকল বাস বন্ধ করে দেয়া হয়। ওয়েলকাম, লাব্বাইক, এম এম লাভলী পরিবহনের কোনো গাড়ি চলাচল করছে আজও।
কেন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এ বিষয়ে ওয়েলকাম পরিবহনের চেকার সোহাগ জানান, ছাত্ররা গাড়ির গ্লাস ভাঙবে এই ভয়ে বাস রাস্তায় নামছে না।
আজ তো ছাত্রদের আন্দোলন নেই। তবে কেন রাস্তায় বাস বন্ধ?
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভয়ে নামছে না বাস। অনেকের কাগজ ঠিক নেই। এ জন্য মালিক পক্ষ থেকে বাস না নামানোর নির্দেশ আছে।
রাজধানীর রাস্তায় বাস চলাচল বন্ধ করা হবে না এমন কথা গতকাল (বুধবার) পরিবর্তন ডটকমকে বলেছিলেন ঢাকা পরিবহন বাস মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।
সপ্তাহের শেষ দিনে কেন বাস চলছে না এ বিষয়ে জানার জন্য মালিক সমিতির সভাপতির সঙ্গে সকাল থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সকাল ১০টা পর্যন্ত তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে রাস্তায় বাস না থাকায় আফিসগামী নাগরিকদের কষ্টের কমতি নেই।
নতুন বাজার এলাকায় বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন সায়মা সরোয়ার। তিনি যাবেন মতিঝিল। সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ওই রুটের কোনো বাসের দেখা পাননি তিনি।
সায়মা বলেন, গত চার দিন ছাত্ররা আন্দোলন করেছে, তখন বাস না পাওয়া কোনো সমস্যা ছিলো না। আজ তো কেউ রাস্তায় নামছে না, তাহলে কেন বাস থাকবে না।
পরিবহন শ্রমিকদের কাছে নগরবাসী জিম্মি এমন কথা বারবার উঠলেও তাতে কারো কর্ণপাত নেই। শুধু পারে সাধারণ মানুষদের কষ্ট দিতে ক্ষুব্ধ হয়ে কথাগুলো বলছিলেন মাইদুল হাসান।
তিনি বলেন, চালকদের লাইসেন্স থাকবে না এটা সমস্যা না। সমস্যা হয় লাইসেন্স কেন নেই তা জিজ্ঞেস করলে।
এদিকে নতুন বাজার এলাকা থেকে মিরপুর রুটে গাড়ির যে লাইন দেখা যেত, সেই লাইন আজকে চোখে পরেনি।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাস বিমানবন্দর সড়কের জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের গোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই দু’জন নিহত হন।
নিহতরা হলেন— শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির আবদুল করিম এবং একাদশ শ্রেণির দিয়া খানম মিম। এ ঘটনায় দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর আলম রোববার রাতে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে হত্যার অভিযোগ আনা হয় ওই মামলায়।
ওই ঘটনার পর দোষীদের বিচার চেয়ে ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নামে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন