রাজধানীতে বাস সংকটে কর্মজীবী যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীদের ভিড় থাকলেও দেখা মিলছে না কাঙ্ক্ষিত পরিবহন সেবার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো বাসের দেখা না পাওয়ায় অনেকে পায়ে হেঁটেই রওনা দিচ্ছেন অফিসে। আবার কেউ কেউ অতিরিক্ত টাকা দিয়ে রিকশা কিংবা ভ্যানে অফিসের পথে রওনা দিয়েছেন। কোথাও কোথাও মিনি পিকআপগুলোও এখন যাত্রীদের ভরসা হয়ে উঠেছে। তবে বাস সংকটে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে।
গত সপ্তাহে বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহতের পর বন্ধ করে দেওয়া হয়ে সুপ্রভাত পরিবহন। ‘গাজীপুরা টু সদরঘাট’ রুটে সুপ্রভাত পরিবহনের প্রায় সাড়ে তিনশ বাস প্রতিদিন যাত্রী পরিবহন করতো। তবে হঠাৎ করে এই রুটে এতসংখ্যক বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে কর্মমুখী যাত্রীদের। এছাড়াও ট্রাফিক পুলিশের কড়া নজরদারিতে রাস্তায় গণপরিবহন কম নামায় রাজধানীজুড়ে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কর্মজীবী যাত্রীদের।
রাজধানীর খিলক্ষেত বাস স্টপেজে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফিসা মেহজাবিন। তিনি বলেন, ‘সকাল নয়টার দিকে স্টপেজে এসে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিলাম। অনেকগুলো বাস চোখের সামনে দিয়ে গেলেও পুরুষদের সঙ্গে ঠেলাঠেলি করে উঠতে পারিনি। আবার কিছু বাস আগে থেকেই গাদাগাদি করে ভরে আসছে। ১১টায় পরীক্ষা আছে, তাই এখন আর অপেক্ষা করতে পারছি না। এখন রিকশা অথবা ভ্যানগাড়ি করে যাবো ভাবছি।’ নগরজুড়ে এমন ভোগান্তির সমাধান চান তিনি।
গণ-পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীজুড়ে বাস সংকটের কয়েকটি কারণের একটি হলো ট্রাফিক পুলিশের কঠোর নজরদারি এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ফলে বন্ধ হয়ে যাওয়া সুপ্রভাত পরিবহন। নগরজুড়ে গণপরিবহনের নৈরাজ্য ঠেকাতে ট্রাফিক পুলিশের কঠোর নজরদারির ফলে অর্ধেকের বেশি বাস রাস্তায় নামছে না। সেই সঙ্গে বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোও এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণার ফলে অযোগ্য বাসগুলো রাস্তায় নামতে দিচ্ছে না তারা। আবার যেগুলো নামছে সেগুলোকে মামলা দেওয়া হচ্ছে কিংবা ডাম্পিংয়ে নেয়া হচ্ছে। এ কারণে নগরজুড়ে গণ-পরিবহনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর, খিলক্ষেত, বাড্ডা, লিংক রোড, রামপুরা, ও গাজীপুরের টঙ্গীর বিভিন্ন জায়গায় পরিবহন সংকট রয়েছে। কোথাও কোথাও গণপরিবহন খুব কম অথবা বাস চলাচল করলেও নেয়া হচ্ছে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া। এতে কেউ কেউ প্রতিবাদ করলেও মিলছে না প্রতিকার। তাই নিরূপায় হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের।
অনাবিল পরিবহনের চালক সোহরাব বলেন, ‘কাগজপত্র থাকলেও পুলিশ মামলা দিচ্ছে। তাই অনেক গাড়ি রাস্তায় নামছে না।’ তার মতে কাগজ না থাকলে মামলা দেয়া উচিত, তবে যাদের কাগজপত্র আছে তাদেরকে যেন হয়রানি না করে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন