রাজধানীর নীলক্ষেতে ভাড়ায় মিলছে ‘পাঠ্যবই’
বইয়ের মার্কেটের জন্য বিখ্যাত রাজধানীর নীলক্ষেত। গল্প, উপন্যাস, কবিতা, ছড়া, ইতিহাস, পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি এখানে চিকিৎসা বিজ্ঞানসহ আন্তর্জাতিক মানের বই পাওয়া যায়। হাতের কাছে সুবিধামতো দামে বই পাওয়ায় রাজধানীর অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেতে ভিড় জমায়। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ইডেন কলেজ ও ঢাকা কলেজ নীলক্ষেতের পাশে হওয়ায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের সুবিধামতো সময় বই কিনতে পারে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এই মাকের্টের কয়েকটি দোকান থেকে পাঠ্যবই ভাড়া হিসেবে নেওয়া যায়। অনেকেই পরীক্ষার আগের দিন এসে চুক্তিভিত্তিক দামে ভাড়া করে বই সংগ্রহ করে। পরীক্ষা শেষ হলে কিছু টাকা যোগ করে আবার বই দিয়ে যায়। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি গল্প, উপন্যাসও ভাড়ায় পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নীলক্ষেতের বই বিক্রেতা আরিফ হোসেন জানান, অনেক শিক্ষার্থী নতুন বইয়ের দাম বেশি হওয়ায় পুরানো বই কিনতে আসে। অনেকে আবার পরীক্ষার আগে এসে বই নিয়ে যায়। পরীক্ষা শেষ হল কিছু টাকা যোগ করে বই ফিরিয়ে দিয়ে যায় ।
পুরনো বই বিক্রেতা আহাসান আলী জানান, ১৯ বছর হইয়া গেছে পুরান বই বেচতাছি। আমরা সব ধরনের বই-ই বেচি। এখানে পাওয়া যাইবো না, এমন কোনো বই নাই। যেসব বই আর নতুন পাওয়া যাইবো না, সেগুলার পুরান সংস্করণও এখানে আছে। ছাত্ররা নিজেদের পছন্দমতো বই কিনে নিয়ে যায়। তবে আগের মতো আর ব্যবসা হয় না। একদিকে যেমন ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেড়েছে, অন্যদিকে পুরান বইয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কমেছে।
বই কিনতে আসা ইডেন কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সানজেদা আক্তার বলেন, ৮০ টাকা দিয়ে ইসলামী ইতিহাসের একটা বই নিয়েছি। আগামী সপ্তাহে পরীক্ষা আছে। পরীক্ষা শেষ করে আবার বই দিয়ে যাবো। দোকানদার ভাই ৬০ টাকা ফিরিয়ে দেবে। এছাড়া মাঝে মাঝে পুরানো বই এখান থেকে কিনে নিয়ে যাই।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আল ইমরান বলেন, ছাত্র রাজনীতি করার কারণে বই পড়ার তেমন সময় পাই না। পরীক্ষার সময় এলেই কেবল বই খোঁজ করি। বেশির ভাগ সময় নীলক্ষেত থেকে পুরানো বই নিয়ে যাই। পরীক্ষা শেষ করে তাদের কাছে আবার বিক্রি করে দেই। অনেক সময় চুক্তির মাধ্যমে এখান থেকে বই নিয়ে যাই।
আসাদ নামের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, নীলক্ষেতের বই ব্যবসায়ীদের কাছে আমারা এক প্রকার জিম্মি। আমরা তাদের কাছ থেকে নতুন বই ২০০ টাকা দিয়ে কিনি। একই বই যখন পরীক্ষার পর বিক্রি করতে যাই, তখন ৩০ থেকে ৪০ টাকার বেশি দিতে চায় না। কিন্তু একই বই পুরনো হিসেবে কিনতে গেলে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা গুণতে হয়। এটা এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী কে এম আবু ইউসুফ জানান, নীলক্ষেত থেকে প্রতিনিয়ত আমাদের কিছু বন্ধু পরীক্ষার আগের রাতে বই ভাড়া করে নেয়। পরীক্ষার পর সেই বই দিয়ে আসে। এভাবে অনেকেই অনার্স শেষ করেছেন।
আজিজ নামের এক অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। তার জন্য গল্পের বই কিনতে এখানে এসেছি। মাঝে মাঝে সাধারণ জ্ঞানসহ বিভিন্ন ধরনের বই কিনতেও এখানে আসি। অন্য মার্কেটের চেয়ে এখানকার বইয়ের দাম কিছুটা কম।-একুশে টিভি
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন