রাজপথে রিকশার রাজত্ব, ভাড়া বেড়েছে কয়েক গুণ

বিমানবন্দর সড়কের শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় টানা সপ্তম দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য অনেকে ছুটছে হেঁটে আবার অনেকে রিকশাযোগে।

রিকশার ভাড়া বেড়েছে কয়েক গুণ। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি ভাড়া ছাড়া কোনো কথাই বলছেন না তারা। এক এক রিকশাওয়ালা এখন দিনে দুই থেকে তিন হাজার টাকা আয় করছেন। ঢাকার সড়কপথের রাজত্বে এখন তারা।

আগে যেখানে তারা দিনে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা আয় করতেন।

শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, রাজাধানীর গুলিস্তান, পল্টন, শান্তিবাগ, রামপুরা ও বাড্ডা এলাকায় সড়কে দু-একটা বিআরটিসির বাস ছাড়া অন্য কোনো বাস চলছে না। গন্তব্যে যাওয়ার জন্য শত শত মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। কেউ বা রিকশাযোগে দুই থেকে তিন গুণ ভাড়া বেশি দিয়ে গন্তব্যের দিকে ছুটছে। আবার কেউবা পায়ে হেঁটে ছুটছে। মোড়ে মোড়ে শিক্ষার্থীর প্রাইভেটকারের লাইসেন্স চেক করছে। রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

রামপুরায় থেকে রিকশাযোগে লিংক রোড যাবেন মোহাম্মদ আলী। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন তিনি। তিনি বলেন, নিয়মিত ভাড়া ৪০ থেকে ৩৫ টাকা। সড়কে গাড়ি না থাকায় এখন কমপক্ষে ১০০ টাকা লাগছে।

বাড্ডা লিংক রোড থেকে হেঁটে গুলশান ১-এর দিকে রওনা হয়েছে রেহেনা বেগম। তিনি বলেন, রাস্তায় গাড়ি নেই। আর রিকশা ভাড়া কয়েক গুণ বেড়েছে। প্রতিদিন অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে। তকাই আজ হেঁটে রওনা হলাম।

তিনি বলেন, শুধু ভাড়া বেশি না, আবার যেতেও চায় না। আর রিকশা না থাকায় ভাড়া আরও বেড়ে যায়।

ওই নারী জানান, রিকশাওয়ালাদের রাজত্ব চলছে। কোনো গাড়ি না থাকায় তারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে। দুই থেকে তিন গুণের বেশি ভাড়া আদায় করছে তারা। আমরা এখন অসহায়। বেশি ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে।

ভাড়া বেশি নেয়ার বিষয় রিকশাচালক মোতালেব বলেন, ভাড়ার চাহিদা বেশি। সুযোগ তো সব সময় আসে না। তাই একটু বেশি ভাড়া নিচ্ছি। আগে যেখানে রিকশা চালিয়ে আয় হতো ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা। এখন সেখানে দুই থেকে তিন হাজার টাকা আয় হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। একই ঘটনায় আহত হন আরও ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী।

জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই দুই শিক্ষার্থী। তারা হলেন- শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।