রাজশাহী গৃহবধূর অসংলগ্ন ছবি তুলে ব্লাকমেইল, গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তার ২ বছর কারাদণ্ড
রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে গ্রামীণ ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে নগদ ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুরে আদালতের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে আদালতের নির্দেশে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্তের নাম রাজু আহম্মেদ (৩৫)। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের টাঙ্গাইল শাখার কর্মকর্তা এবং রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শিবজাইট গ্রামের সনজেব আলী প্রামাণিকের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গৃহবধু বাদীর বাবার বাড়ী ও রাজুর বাড়ী একই গ্রামে। রাজু চাকরীর সুবাদে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে থাকেন। মাঝে মধ্যে গ্রামের বাড়ীতে আসেন। পরিচিত হওয়ার সুবাদে তার কাছে বিভিন্ন ঘটনা জানতে চান। এ সময় ওই গৃহবধূ রাজুকে জানান, তার স্বামী একটি মামলায় কারাগারে আটক রয়েছেন এবং বাবা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুশয্যায়। এ সময় রাজু তাকে আশ্বস্ত করেন যে, তার স্বামীকে কারাগার থেকে বের করবেন। এ কথা বলে তার মোবাইল নম্বর নিয়ে মাঝেমধ্যেই যোগাযোগ করেন। একদিন তাদের বাড়িতে গিয়ে ওই গৃহবধূর কিছু অসংলগ্ন ছবি রাজু তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে ফেলেন। পরে সেই ছবি দেখিয়ে তাকে ব্লাকমেইল করে ধারাবাহিকভাবে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এরইমধ্যে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান ওই গৃহবধূর স্বামী। এ সময় তাকে আবারও ভয়ভীতি দেখিয়ে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেন রাজু। না হলে তার সব নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে এ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা বেগম বলেন, ২০২১ সালের ৭ জুন সাইবার আইনে রাজুর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিলেন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ। রায়ে একটি ধারায় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর অপর ধারায় আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এক সাজার মেয়াদ শেষে অন্যটি কার্যকর হবে। এছাড়া গ্রেফতারের পর হাজতবাস মূলে সাজার দিন কারাদণ্ড থেকে বাদ দিতে বলা হয়েছে। আর জরিমানার অর্থ বাদী পাবেন। মামলায় মোট ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বুধবার দুপুরে আদালতের বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন