রাতের বৈঠকে এনআরবিসি ব্যাংকে বড় পরিবর্তন
ঋণে কেলেঙ্কারীর ঘটনার পরে এবার এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের শীর্ষ পদে বড় ধরণের পরিবর্তন এল। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) পদে পরিবর্তন এসেছে।
রোববার(১০ ডিসেম্বর) রাতের বেলা এক বৈঠকে এই শীর্ষ পদে পরিবর্তনের পাশাপাশি ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ সব কমিটির চেয়ারম্যানও পদত্যাগ করেছেন।
সূত্র জানায়, রাতে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে এক জরুরি পর্ষদ সভায় এসব পরিবর্তন হয়। ওই সভাতে পদত্যাগ করা পর্ষদ ও নতুন পর্ষদের বেশির ভাগ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ফরাছত আলীকে সরিয়ে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন তমাল এস এম পারভেজ। ভাইস চেয়ারম্যান তৌফিক রহমান চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনজুরুল ইসলাম, নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান নুরুন নবী ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনসেফ আলীকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এমডি দেওয়ান মুজিবর রহমানকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এ পদে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ডিএমডি কাজী মো. তালহাকে।
নতুন চেয়ারম্যান তমাল এস এম পারভেজ সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাংকের ভাবমূর্তি রক্ষায় এ পরিবর্তন এসেছে। আমরা ব্যাংকটিকে ভালো করতে চাই, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব নয়।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ২০১৬ সালে এনআরবিসির ৭০১ কোটি টাকা ঋণে গুরুতর অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকটিতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের ২০ মার্চ ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও এমডির কাছে পাঠানো পৃথক নোটিশে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আমানতকারীদের স্বার্থে ও জনস্বার্থে এনআরবিসি ব্যাংক চালাতে ব্যর্থ হয়েছে ফরাছত আলীর নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ। আর এমডি ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাংকটিতে যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে। এমনকি তাঁরা গুরুতর প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছেন, যা ফৌজদারি আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয়।
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী গত মঙ্গলবার রাতে গভর্নর ফজলে কবির এমডি দেওয়ান মুজিবর রহমানকে অপসারণ করেন। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারায় কাউকে অপসারণ করা হলে ওই অপসারিত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ চাওয়ার কোনো অধিকার থাকে না। এমনকি এ ধারার কোনো আদেশের বিষয়ে কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না।
তবে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কাছে আবেদন করতে পারবেন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি। যদিও এ আইনকে পাস কাটিয়ে উচ্চ আদালতে যান দেওয়ান মুজিব। তাকে অপসারণের নোটিশটিতে আদালতের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আনেন। এরপর থেকেই ব্যাংকপাড়ায় তুমুল আলোচনার জন্ম দেয় ব্যাংকটি।
এ কারণেই ব্যাংকটিতে পরিবর্তন আনতে অনানুষ্ঠানিক চাপ তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই পরিবর্তন এল হঠাৎ করেই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন