রাষ্ট্র সংস্কারে নতুন বাংলাদেশ’র ৮ প্রস্তাবনা
গবেষণা ভিত্তিক সামাজিক সংগঠন নতুন বাংলাদেশ’র উদ্যোগে ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ঢাকার জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্সে পুষ্পদাম চাইনিজ রেস্টুরেন্ট চলমান রাজনীতি—আমাদের করনীয় শীর্ষক আলোচনা সভা ও ডিনার পার্টিতে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৮ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
নতুন বাংলাদেশ’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক পরিবেশবিদ বাপ্পি সরদার’র সভাপতিত্বে নতুন বাংলাদেশ’র সমন্বয়কারী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মহসিন সিকদার পাভেল সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি শাহ মোঃ আবু জাফর, সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. ইঞ্জি. মোঃ রফিকুল ইসলাম, বীরমুক্তিযোদ্ধা এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আব্দুর রহিম।
বিকল্প ধারার সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য এনায়েত কবির, কূটনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিবলী সাদিক, সাবেক ট্যাক্স কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান, প্রত্যাশা বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, রাষ্ট্রচিন্তক মোঃ হাবিবুর রহমান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুব আন্দোলনের সভাপতি হাবিবুর নবী সোহেল, মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব শিক্ষাবিদ উপাধ্যক্ষ নুরুজ্জামান হীরা, টিক্যাবের আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক সহ শতাধিক সংগঠক। আলোচনায় চলমান রাজনীতি নিয়ে আলোচকরা বর্তমান সরকারকে সমর্থনের পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদে তরুণ প্রজন্মের আরও বেশ কয়েকজন সুনাগরিকে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান।
নতুন বাংলাদেশ’র পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ৮ দফা সমূহ:
১) সর্বস্তরের দুর্নীতি বন্ধে পার্লামেন্টারি নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে সরকার ও রাজনৈতিক দলের ভারসাম্যতা নিশ্চিত করতে জনপ্রতিনিধি ও নাগরিকদের সমন্বয়ে “প্রতিনিধিত্বশীল সরকার” ব্যবস্থার প্রবর্তন করা।
২) স্থায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন এবং বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সাবেক বিচারপতি ও সিনিয়র আইনজীবীদের সমন্বয়ে “জুডিশিয়াল সিলেকশন প্যানেল” গঠন এবং বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্ট ডিভিশন চালু করা।
৩) নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে স্থায়ীভাবে ক্যাডার ও নন ক্যাডারদের মধ্য হতে নির্বাচন কমিশনার নির্বাচিত করা এবং দল নিবন্ধন আইনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হলে রাজনৈতিক দলের প্রতীক বরাদ্দ নিশ্চিত করা। স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর স্থায়ীভাবে বাতিল করা।
৪) বেকারত্ব দূরীকরণে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি এসএসসি পাঠ্যক্রমের পরে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করে ২৬ বছর বয়সের মধ্যে সরকারি চাকরি নিশ্চিত করা, বেসরকারি কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে জেলাভিত্তিক শিল্প স্থাপন জোরদার এবং বিদেশে টাকা পাচার রোধে অঞ্চল ভিত্তিক বিনিয়োগ সহজীকরণ করা।
৫) জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকে পরিবেশ বিপর্যয়ের ভয়াবহতা তুলে ধরা, ক্লিন ভিলেজ— গ্রিন ভিলেজ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গ্রাম ভিত্তিক সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি বাস্তবায়ন, শিশু শ্রেণী ও প্রাইমারি স্কুল পর্যায়ে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং নারীর জীবনমান উন্নয়নে “জাতীয় নারী উন্নয়ন কমিশন” গঠন করা।
৬) সরকারের পক্ষ থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দক্ষ শ্রমিক বিদেশ পাঠাতে জেলা ভিত্তিক কারিগরি প্রতিষ্ঠান স্থাপন, নতুন নতুন শ্রমবাজার তৈরি করতে “জাতীয় লেবার হেল্পিং কাউন্সিল” প্রতিষ্ঠা, প্রবাসীদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন, বিনামূল্যে মৃত প্রবাসী শ্রমিকের লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা করা।
৭) সর্বস্তরে মেধা ভিত্তিক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে “জাতীয় নিয়োগ কমিশন” গঠন এবং যে কোন বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার তদন্ত ভুল প্রমাণিত হলে শাস্তির পাশাপাশি চাকুরী চ্যুতির বিধান চালু এবং স্বাধীন গণমাধ্যম নিশ্চিত করতে জাতীয় প্রেস কাউন্সিলকে শক্তিশালী করা।
৮) রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করা এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মেয়াদকালে জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যেকোন নাগরিক আদালতে মামলা করতে পারবে এমন বিধান চালুর পাশাপাশি ক্ষমতার মেয়াদকালে জনগণ চাইলে অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি বাতিল করতে পারবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন