রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি: ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে নদ-নদী, আতঙ্কে লাখো মানুষ
দুদিনের টানা বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দিনাজপুরের প্রধান নদীগুলো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত দুদিনে ৪৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত ১০ বছরের মধ্যে বেশি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে মাহুতপাড়ায় বাঁধ ভেঙে একটি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন রোববার সকালে জানিয়েছেন, পুনর্ভবা ও আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার করতোয়া, ঢেপা, ছোট যমুনাসহ অন্যান্য নদীর চিত্রও একই।
বেশ কিছু এলাকায় পানি ঢুকে প্লাবিত হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের লোকজন গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।
এদিকে দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় জেলায় সর্বোচ্চ ৪৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত ১০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক গোলাম মোস্তফা জানান, অবিরাম বৃষ্টিতে দিনাজপুরে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির আমন চারা ও বেশ কিছু পুকুর ডুবে গেছে। এতে মৎস্যচাষিদের বেশ ক্ষতি হয়েছে।
পাউবোর প্রকৌশলীরা গতকাল জানিয়েছিলেন, দেশের অধিকাংশ নদ-নদীর পানি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণেই এ অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। দেশের কিছু কিছু এলাকা এরই মধ্যে জলমগ্ন হয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
পাউবো জানায়, বাংলাদেশের উজানের তিনটি অববাহিকায় (গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা) মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার ফলে গত তিন দিন থেকে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে এই অববাহিকার নদীগুলোর ভারতীয় অংশে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এর আগে গত ২৬ আগস্ট সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মধ্য আগস্টে দেশে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেছিলেন, ‘এবার দ্বিগুণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। সামনে পদ্মা, মেঘনা, যমুনার পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে তিনটি নদীর পানি বৃদ্ধি এবং অমাবস্যা হলে সাধারণত বাংলাদেশে বন্যা হয়। তাই আগস্টের মাঝমাঝি বড় ধরনের বন্যার শঙ্কা রয়েছে।’ এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন পানিসম্পদমন্ত্রী।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন