রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের অবস্থান মারাত্মক : আব্বাস

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে ভারতের অবস্থানের কড়া সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের এমন অবস্থান খুবই মারাত্মক। বাংলাদেশ সরকারের উচিত ছিল এর প্রতিবাদ করা।

আজ রবিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহর প্রথম মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে এটি আয়োজন করে বিএনপি।

আব্বাস বলেন, ‘মিয়ানমারে যখন জাতি নিধন শুরু হয়, তখন ভারত বলল তারা মিয়ানমারের পাশে আছে। এখন ভারত বলছে রোহিঙ্গাদের সমস্যায় বাংলাদেশের পাশে আছে।’

ভারতের এই অবস্থানকে ‘খুবই মারাত্মক’ বলে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের উচিত ছিল এর প্রতিবাদ করা। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের যে ভূমিকা নেয়ার কথা সেটা নিতে ব্যর্থ হয়েছে তারা।’

‘কিসের ভয়ে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে না’ এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে ওবায়দুল কাদের রাশিয়া ও চীনের দ্বিচারী ভূমিকায় মর্মাহত হচ্ছেন। অথচ ভারত যে দ্বিচারী ভূমিকা নিয়েছে, তাতে তিনি মর্মাহত হননি। কারণ তারা ভারতকে এত দিলেন- ট্রানজিট, নৌরুট, এটা-সেটা, এখন ভারত আর কী চাইবে সেই অপেক্ষায় আছে তারা।’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন পাওয়া যাবে না মনে করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘যাদের সমর্থন পাওয়া যাবে, তারা হলো বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ। তাদের ওপর ভরসা করেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাব। আজ না হয় কাল।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আমলে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের কথা তুলে ধরে আব্বাস বলেন, ‘১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমানের আমলে মিয়ানমারের ৩০ হাজার সৈন্যের বিরুদ্ধে আমাদের আড়াই হাজার সৈন্য মিয়ানমারের তিন কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল। পরে মিয়ানমার আপোষ করতে বাধ্য হয়েছিল।’

আব্বাস বলেন, ‘আজকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্য, বাংলাদেশ সরকারে সেই অবস্থান নিতে পারছে না। পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যানার্জি যে ভাষায় কথা বলেন, আমাদের সরকার সেই ভাষায়ও কথা বলতে পারছে না। কিসের ভয়?’

রোহিঙ্গাদের জন্য বিএনপির ত্রাণ বিতরণে বাধা দেয়া হয়েছে দাবি করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমরা এখন অন্যভাবে ত্রাণ দিচ্ছে। টিউবওয়েল ও স্যানিটারির কথা আওয়ামী লীগ ভাবেনি। আমরা শুরু করেছি। অতঃপর তারা আমাদের অনুকরণ করছে।’

সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক সায়েদুল ইসলাম বাবুল, হান্নান শাহর ছোট ছেলে রিয়াজুল হান্নান প্রমুখ।

পরে আ স ম হান্নান শাহর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপি নেতা কাজী আবুল বাশার, শামসুল ইসলাম তোফা, সাইফুল ইসলাম পটু, আমিনুল ইসলাম, মাওলানা এমএম মালেক, নেসারুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসান প্রমুখ অংশ নেন।