লক্ষ্যমাত্রা ৩৯ হাজার ৬০৪ হেক্টর! চলনবিলে শুরু হয়েছে বিনাহালে রসুন রোপন
আমন কাটার পর একই জমিতে বিনাহালে কাদার ওপর চলছে রসুন রোপন। চলতি বছর চলনবিলের আটটি জেলায় ৩৯ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে আঞ্চলিক কৃষি অফিস। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার রসুনের দাম বেশি এতে করে রসুন চাষে কৃষকের সার্বিক ব্যায়ও বেড়েছে।
এ অঞ্চলের কৃষকরা জানিয়েছেন, সেচ, সার-কীট নাশক, বীজ, শ্রমিকসহ সার্বিক ব্যায় বাড়লেও গত বছর ভালো দাম পাওয়া এবং সাথী ফসল তরমুজ-বাঙ্গিতে লাভবান হওয়ায় রসুন চাষে এই অঞ্চলের কৃষকের আগ্রহ আরো বেড়েছে।
রাজশাহী ও বগুড়া আঞ্চলিক কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি মওসুমে রাজশাহী অঞ্চলের চার জেলায় ২৮ হাজার ১৮৫ ও বগুড়া অঞ্চলের চার জেলায় ১১ হাজার ৪১৯ হেক্টর জমিতে রসুন রোপনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
এরমধ্যে রাজশাহীতে ৫ হাজার ৫২০, নওগাঁয় ৭৬৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩ হাজার ৭০০, নাটোরে ১৮ হাজার ২০০, বগুড়ায় ৬০০, জয়পুরহাটে ২৮৭, পাবনায় ৯ হাজার ৬৩২, সিরাজগঞ্জে ৯০০ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ করা হচ্ছে।
হিসেব বলছে, রাজশাহী ও বগুড়া অঞ্চলে ২০২১ মওসুমে ৫১ হাজার ৪৩৩ হেক্টর, ২২ মওসুমে ৪৪ হাজার ৪৬৯, হেক্টর, ২৩ মওসুমে ৩৭ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে বিনাহালে রসুন আবাদ করা হয়েছে। এই ৩ মওসুমে রসুনের উৎপাদন হয়েছে ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৭০৭ মেট্রিকটন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, চলতি বছর জমি লীজ বাবদ প্রতি বিঘায় ১০হাজার, সার-কীটনাশক বাবদ ৫ হাজার, বীজ বাবদ ৩০ হাজার, শ্রমিক বাবদ ৮ হাজারসহ শুধু রসুন রোপনেই মোট ৫৩ হাজার টাকা ব্যায় হচ্ছে। গত বছর এই খরচ ৪২ থেকে ৪৫ হাজারের মধ্যে ছিল।
চলনবিলের কৃষক ইমন সরকার, মাহবুর, মইনুল, জিল্লু , আশরাফুল ও আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বেশিরভাগ কৃষক ঋণের টাকায় রসুন রোপন করেন। অথচ প্রায় প্রতিবছরই রসুনের দাম উঠানামা করে। তারপরও গত বছরের হিসেব মতে, প্রতি বিঘায় ৪৫ হাজার টাকা ব্যায়ে গড়ে ২০ থেকে ২৪ মণহারে রসুনের ফলন পাওয়া গেছে।
বাজার দর ভালো থাকায় আর্থিকভাবে লাভবানও হয়েছেন তারা। চলতি মওসুমে খরচ একটু বাড়লেও আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে রসুনের বাম্পার ফলনের আশা তাদের। একই সঙ্গে একই খরচে রসুনের জমিতে সাথী ফসল তরমুজ-বাঙ্গিতেও লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
কৃষি অফিস বলছে, ইতোমধ্যে নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, পাবনার চাটমোহর, হান্ডিয়াল, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ এলাকায় রসুন রোপন শুরু হয়েছে। রসুন রোপনের পাশাপাশি রসুন ভাঙ্গার কাজে এই অঞ্চলের মানুষ ব্যাস্ত সময় পাড় করছেন।
রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ও বগুড়ার অতিরিক্ত পরিচালক সরকার শফিউদ্দিন বলেন, চলনবিল অঞ্চলে গত প্রায় ১৫ বছর ধরে বিনাহালে রসুন আবাদ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কাদার ওপর রসুন রোপনের পর একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে তরমুজ বাঙ্গি চাষ এ অঞ্চলের কৃষকদের ভাগ্যের চাকা ঘুড়াচ্ছে।
বিশেষ করে গত মওসুমে ভালো দাম পাওয়ায় এবছর লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অধিক জমিতে রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলেও এবছরও রসুনে ভালো ফলন পাবেন কৃষকরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন