শঙ্কামুক্ত নন মেহেদি-স্বর্ণা-অ্যানি, রোববার মেডিকেল বোর্ড গঠন
নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহত মেহেদী হাসান, তার স্ত্রী সৈয়দা কামরুন নাহার স্বর্ণা এবং মেহেদীর ভাবি আলমুন নাহার অ্যানি কেউই শঙ্কা মুক্ত নন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন।
ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তির পর চিকিৎসকরা তাদের দেখে শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
ডা. সামন্তলাল সেন বলেন: মেহেদির শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে গেছে। ঘাড়ে আঘাত রয়েছে। স্বর্ণার শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। সারা শরীরে ব্যথা। অ্যানির ডান পায়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে। শ্বাসনালীতে ইনজুরি আছে। হাসপাতাল থেকে ছুটির আগে তাদের শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোববার মেডিকেল বোর্ড গঠন করার পর সিদ্ধান্ত হবে কিভাবে তাদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হবে। অবস্থার উন্নতি হতে ছয় থেকে সাত সপ্তাহ সময় লাগবে।
শুক্রবার বিকাল পৌনে ৫টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে তাদের ভর্তি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নেপালের দুর্ঘটনায় আহত বার্ন ইউনিটে ভর্তি রোগীদের সর্বশেষ অবস্থার কথা জানাচ্ছেন ডা. সামন্তলাল সেন এর আগে কাঠমান্ডুতে প্লেন দুর্ঘটনায় আহত শাহরিন আহমেদকে বৃহস্পতিবার ঢাকায় আনা হয়। বর্তমানে ঢামেক বার্ন ইউনিটের ভিআইপি-২ কেবিন চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
তাকে নিয়ে এখন পর্যন্ত কাঠমান্ডুতে প্লেন দুর্ঘটনায় আহত ৪ জনকে ঢামেকে আনা হয়েছে।
এছাড়াও দুর্ঘটনায় আহত ইয়াকুব আলিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেওয়া হচ্ছে। রেজওয়ানুল হক নামে অপর একজনকে বুধবার রাতেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এছাড়া শুক্রবার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে বিমান দুর্ঘটনায় আহত শাহরিন আহমেদকে দেখার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশমতে আহতদের চিকিৎসা সেবা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। চিকিৎসা সেবায় যেন কোনো গাফিলতি না হয় সে ব্যবস্থাও আমরা করেছি। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব আহতদের দ্রুত সুস্থ করে তোলার। এছাড়া আহতদের মানসিক ও শারীরিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
সোমবার ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বোমবার্ডিয়ার ড্যাশ ৮ কিউ৪০০ উড়োজাহাজটি ঢাকা থেকে ছেড়ে গিয়ে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে নেপালে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়।
এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫১। এর মধ্যে ২৮ জন বাংলাদেশি, ২২ জন নেপালি এবং ১ জন চীনা নাগরিক। চিকিৎসাধীন যাত্রীদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
উড়োজাহাজটিতে থাকা ৬৭ যাত্রীর মধ্যে ৩২ জন বাংলাদেশি, ৩৩ জন নেপালি, একজন মালদ্বীপের এবং একজন চীনের নাগরিক। উড়োজাহাজটিতে ৬৭ যাত্রীর পাশাপাশি ৪ জন ক্রু ছিলেন বলে ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন