শাড়ীর ব্যবসায় সাফল্য ও খ্যাতি পেয়েছেন গৌরীপুরের বধূ সুবর্ণা রায়

নারীরা ঘরের গন্ডি পেরিয়ে বহুমাত্রিক প্রতিভায় বিকশিত করছেন নিজেদের। কেউ কেউ করছেন চাকরি, কেউবা ব্যবসা। শখের বশে শুরু করা ব্যবসায় সুবর্ণা রায় পেয়েছেন সাফল্য ও খ্যাতি। স্বামী-সন্তান-সংসারের ব্যস্ততা কাটিয়ে অনলাইন-অফলাইনে তিনি হয়ে উঠেছেন একজন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী। তাঁর রয়েছে শাড়ির দুটি কারখানা। পেয়েছেন বহু সাফল্য ও পুরস্কারও।

এমন একজন সফল নারী উদ্যোক্তার গল্প বলছি আজ। তিনি একজন সংগ্রামী সফল নারী উদ্যোক্তা ‘রাজশ্রী শাড়ীজ’ এর স্বত্ত্বাধিকারী সুবর্ণা রায়। রাজধানী ঢাকার কলাবাগান এলাকায় গড়ে তুলেছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
সফল এ নারী উদ্যোক্তা জানিয়েছেন, এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে শ্রম, ধৈর্য্য, আনন্দের এক মহাকাব্য।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরের গৃহবধূ ২০১৭ সাল থেকেই তিনি এ ব্যবসায় জড়িত। টাঙ্গাইলের পাথরাইলের ধুলটিয়া গ্রামে নিজস্ব দুটি কারখানা গড়ে তুলেছেন। কারিগর দ্বারা উৎপাদিত জামদানী শাড়ি ‘রাজশ্রী শাড়ীজ’ অনলাইন পেইজের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকেন। ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে তিনি শাড়িগুলোর দাম ৩শ টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করেছেন, যাতে সব ধরণের ক্রেতারা ক্রয় করতে পারেন। গুণগত মানসম্পন্ন জামদানী শাড়ির চাহিদা থাকায় দেশ ও দেশের বাইরে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে সমানতালে বিক্রি হচ্ছে। মাত্র তিন হাজার টাকায় ডোমেইন-হোস্টিং কিনে এই ব্যবসা শুরু করলেও এখন তার ব্যবসার মূলধান দাঁড়ায় অর্ধ কোটি টাকার বেশি।

সাফল্যের সাথে ব্যবসা করে পেয়েছেন বিভিন্ন ধরণের খ্যাতি, সুনাম ও এ্যাওয়ার্ড। বিজনেস ডাইর্জেস এ্যাওয়ার্ড, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ ও স্টার্ট আপ বাংলাদেশ সামিট এ্যাওয়ার্ড, ইন্টারপ্রেনিয়র এন্ড ই- কমার্স প্লাটফরম (ইপ) থেকে ইপি নক্ষত্র এ্যাওয়ার্ড।
উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনের গল্প শুনতে চাইলে এক সন্তানের জননী সুবর্ণা রায় জানান, তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে ফার্মেসী বিভাগে বিফার্মা, এমফার্মা ও এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করে ফার্মাসিস্ট হিসেবে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীতে চাকরি করেছেন। একটা সময় পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন চাকরি না করে কিভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানো যায়। সেই চিন্তা ও চেতনা থেকেই জামদানী শাড়ির নিজস্ব কারখানা তৈরি করে দেশীয় ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দিয়েছেন দেশ ও দেশের বাইরে।

তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫ তম জন্মদিনে তিনি আইসিটি ডিভিশন থেকে অনুদান পেয়ে www.rajashreesareej.com নামে অনলাইন মার্কেটপ্লেস তৈরী করেছি। যার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের অসংখ্য তাঁতীরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় করতে পারছেন। সবার সহযোগিতা পেলে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশে নির্মাণে সামান্য অবদান রাখতে পারবেন বলেও তিনি আশাবাদী ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অসংখ্য এসএমই ব্যবসায়ী রয়েছেন তাদের পণ্য সেভাবে বিক্রি করতে পারছেন না, তাদেরকে এই মার্কেটপ্লেসে যুক্ত করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে পারবেন।

সুবর্ণা রায়ের স্বামী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার দীপঙ্কর সরকার জানান, রাজশ্রী শাড়ীজ অনলাইন ই-কমার্স প্লাটফর্মের মাধ্যমে ছোট ছোট তাঁত ও তাঁতীকে বাঁচিয়ে রাখতেই তার এ উদ্যোগ। তার পরিকল্পনা রয়েছে এই সাইটটিকে বড় করে জামদানী শাড়ির পাশাপাশি অন্যান্য শাড়ি ও কাপড় এই সাইট থেকে বিক্রয় করা হবে।