শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিএনপির অক্ষমতা দেখছেন কাদের

দুর্নীতি মামলায় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দণ্ডিত হওয়ার পর জনগণের সাড়া না পেয়ে বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা এবং কারাগারে বন্দিজীবনের প্রতিক্রিয়ায় জনগণের কোনো সাড়া পায়নি বিএনপি। অক্ষমতার কারণে তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের কৌশল অবলম্বন করেছে।’

শুক্রবার বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এই কথা জানান।

কাঁচপুরে দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের বিদ্যমান প্রকল্পের সুপার স্ট্রাকচারের লঞ্চিং কাজের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। এর প্রতিবাদে এখন অবধি পাঁচ দিনের কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। প্রতিটি কর্মসূচিই ছিল ‘শান্তিপূর্ণ’।

রায়ের দিন মির্জা ফখরুল জানান, খালেদা জিয়া তাদেরকে হঠকারী কোনো কর্মসূচি দিতে নিষেধ করেছেন। এ কারণেই ‘শান্তিপূর্ণ’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

রায়ের পরদিন শুক্রবার সারাদেশে বিক্ষোভ এবং শনিবার প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।

এরপর সোম থেকে বুধবার টানা তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। প্রথম দিন মানববন্ধন, দ্বিতীয় দিন অবস্থান এবং তৃতীয় দিন অনশন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আরও তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। এর মধ্যে আছে গণস্বাক্ষর, স্মারকলিপি, বিক্ষোভ সমাবেশ।

তবে গত ২৫ জানুয়ারি রায়ের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়ার সাজা হলে দেশে আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণের কাছ থেকে সাজা ও বন্দি হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় কোনো সাড়া-শব্দ থাকবে না এটা বিএনপি ভাবেনি। আসলে বিএনপির ধারণা ছিল ভুল। এখন অক্ষমতার অজুহাতকে তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের কৌশল হিসেবে প্রচার করছে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে নেলসন ম্যান্ডেলার মতো রোবেন দ্বীপে পাঠানো হয়নি। কারাগারে খালেদা জিয়ার সেবা করার জন্য গৃহপরিচারিকা দেয়া হয়েছে। এটা নজিরবিহীন ঘটনা। কারাগার চলবে জেল কোড অনুযায়ী। সেখানে জনাকীর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। কারাগার তো নির্জনই থাকবে।’

প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনকে ‘নিরামিষ’ নির্বাচন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, আওয়ামী লীগ এমন কোনো নির্বাচনে যেতে চায় না। তবে বিএনপি কোনো অজুহাতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে তাদের করার কিছু থাকবে না বলেও মনে করেন তিনি।

বিএনপির কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিচ্ছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কাদের বলেন, ‘বেগম জিয়ার গ্রেপ্তারের পর তারা অনশন, অবস্থান ও বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করেছে, কোথাও তো পুলিশ তাদের কোনো বাধা দেয়নি। তারা আদালতের বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করছে, এটা তাদের মনে রাখতে হবে। এই কর্মসূচি সরকারের বিরুদ্ধে নয়।’

এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক, হাইওয়ে পুলিশের এসপি শফিকুল ইসলামসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা।