শামীমার ‘অন্যায়ের’ জন্য ক্ষমা চাইলেন তার বাবা
যুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেওয়ায় শামীমা বেগমের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তার বাবা আহমেদ আলী। এক ভিডিও ফুটেজে ব্রিটিশ জনগণের কাছে শামীমাকে ক্ষমা করার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমার বাবা বলেন, ‘১৫ বছর বয়সে কিছু না বুঝেই আমার মেয়ে ভুল করেছেন।’
আহমদ আলী আরও বলেন, ‘আমি তার বাবা হিসেবে সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের কাছে, আমি খুবই দুঃখিত শামীমার কৃতকর্মের জন্য। আমি অনুরোধ করছি ব্রিটিশ নাগরিকদের কাছে, আপনারা দয়া করে ওকে ক্ষমা করুন।’
এ সময় যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব সাজিদ জাভিদের কাছে শামীমার নাগরিকত্ব না বাতিলে আহ্বান জানান তিনি। আহমদ আলী মনে করেন, শামীমা অপরাধ করে থাকলে, তাকে যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ‘শামীমা সে সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল। সে অত কিছু বুঝতে পারতো না। আমি মনে করি, এমন কাজ করতে তাকে অবশ্যই কেউ প্রভাবিত করেছে। আমি স্বীকার করি, সে না বুঝেই অপরাধ করেছে।’
এ সময় আহমদ আলি জানান, তার মেয়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী হওয়ার বিষয়ে তার কোনো ধারণা ছিল না। তিনি মাসে মাত্র দু থেকে চারবার বাড়িতে আসতেন। শামীমার বাবা বলেন, ‘আমি বাড়িতে বেশিদিন থাকতে পারতাম না। আমি তার সম্পর্কে বেশি কিছু জানতাম না। তবে আমি যখন তার সঙ্গে ছিলাম, কখনো তার আচরণে সিরিয়া পালিয়ে গিয়ে আইএস যোগদানের বিষয়টি সামনে আসেনি। ’
এর আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, ইসলামের অনুসারি না হলেও শামীমা ‘ভালো মেয়ে’।
২০১৫ সালে আইএসে যোগ দিতে ১৫ বছর বয়সে সিরিয়ায় পালিয়ে গিয়েছিলেন শামীমা। সেখানে ধর্মান্তরিত এক ডাচ নাগরিককে বিয়ে করেন তিনি। এর আগে ওই দম্পতির আরও দুটি সন্তান অসুস্থতা ও অপুষ্টিতে ভুগে মারা গেছে। পরবর্তীতে আইএস উৎখাতে আশ্রয় হারিয়ে শামীমার ঠাঁই হয় এক শরণার্থী শিবিরে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে সেখানে একটি ছেলের জন্ম দেন শামীমা বেগম। ওই ছেলেকে নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্যে ফেরার আবেদনও জানান। তবে ব্রিটিশ সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়। গত বৃহস্পতিবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২০ দিন বয়সী শিশুটি মারা যায় বলে স্থানীয় কুর্দি রেড ক্রিসেন্টের এক চিকিৎসাকর্মী বিবিসিকে জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটিকে হাসপাতালে নেওয়ার আগে তার মা একজন চিকিৎসককে দেখান। পরে দুপুরের দিকেই শিশুটি মারা যায়। মার্কিন সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) প্রথমে শামীমার ছেলের মৃত্যুর খবরটি অস্বীকার করলেও পরে তারা বিষয়টি নিশ্চিত করে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন