শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা নিয়ে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশে যবিপ্রবি প্রশাসনের নিন্দা

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রি. তারিখে দেশের কয়েকটি পত্রিকায় “যবিপ্রবিতে অধ্যাপক পদে ‘পছন্দের প্রার্থীকে’ নিয়োগ দিতে নতুন নীতিমালা” শীর্ষক শিরোনামে অসত্য ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অমূলক ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সংবাদের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে একাধিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর পছন্দের প্রার্থীর জন্য নতুন করে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে এবং এই নীতিমালার আলোকে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীকে বাদ দিয়ে একমাত্র প্রার্থীকে নিয়োগ বাছাই বোর্ডের কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। এ বিষয়গুলো সম্পূর্ণরুপে ভিত্তিহীন এবং তথ্য বিকৃতি।
প্রকৃতপক্ষে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর যবিপ্রবি প্রশাসন ২০০১ সালের আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নিয়োগ ও আপগ্রেডেশন নীতিমালা সর্বজনীন ও বৈষম্যহীন করার লক্ষ্যে শিক্ষক, কর্মকর্তাদের নিয়ে নীতিমালা প্রণয়ন বোর্ড গঠন করে।
উক্ত বোর্ড সমূহ পূর্বের নীতিমালা ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা পর্যালোচনাপূর্বক একটি সর্বজনীন ও বৈষম্যহীন নীতিমালা প্রস্তাব করেন এবং উক্ত নীতিমালা রিজেন্ট বোর্ড কর্তৃক সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।
এই নীতিমালা অনুমোদনের পর গত আগস্ট মাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সকলের অবগতির জন্য প্রকাশ করা হয় যা সকলের নিকট প্রশংসনীয় ও যুগোপযোগী হিসেবে বিবেচিত হয়। এই নীতিমালা অনুযায়ী নিয়োগ ও আপগ্রেডেশনের জন্য শিক্ষক নিয়োগের উচ্চতর ও নিম্নতর বাছাই বোর্ড, কর্মকর্তা বাছাই বোর্ড ও কর্মচারী বাছাই বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
এই নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি স্থিতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তোলা। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী অধ্যাপক পদে আবেদনের জন্য পিএইচডি ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ন্যূনতম ৫ বছর সক্রিয় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে যা কোনো ব্যক্তিবিশেষের জন্য নয় বরং সবার জন্য প্রযোজ্য।
এনএফটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক এখানে (যবিপ্রবি) প্রায় ৮ বছর সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে চাকরি করছেন। উক্ত পদে আবেদনকারী বাকী দু’জনের পাঁচ বছর পূর্ণ হতে বেশ কয়েক মাস বাকী রয়েছে।
এছাড়াও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক যে অভিন্ন নীতিমালার কথা প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সেখানেও পিএইচডি ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ন্যূনতম ৫ বছর সক্রিয় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে।
যুগোপযোগী নীতিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পদে তাদের ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করার কোন সুযোগ না থাকায় যোগ্য প্রার্থীর নামেই কার্ড ইস্যু করা হয়েছে ফলে এই নিয়োগে কোনো ধরণের অনিয়ম বা স্বজনপ্রীতি নেই। উল্লেখ্য এই নীতিমালা শুধু একটি বিভাগের জন্যই নয় বরং অন্যান্য সকল বিভাগের অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকের নিয়োগ ও আপগ্রেডেশনের জন্য প্রযোজ্য।
সুতরাং এই নীতিমালা সর্বজনীন, কোনো ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়। যবিপ্রবি’র অর্গানোগ্রাম (টিওঅ্যান্ডই) অনুমোদন ছাড়া কোন প্রকার আইন লঙ্ঘন করে নিয়োগ প্রদান করার কোন সুযোগ নেই, তাই যথাযথ নিয়ম মেনেই নিয়োগ বোর্ড হচ্ছে।
সুতরাং প্রকাশিত প্রতিবেদন যে মনগড়া ও বানোয়াট তা বলাই বাহুল্য। তাছাড়া যবিপ্রবির পূর্ববর্তী প্রশাসন তৎকালীন সময়ের নীতিমালা ও তৎসংশ্লিস্ট নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশক্রমে ড. ওমর ফারুকের সনদ ও চাকুরির অভিজ্ঞতা যাচাই করেই তাকে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
অতএব, যেখানে যবিপ্রবি’র অর্গানোগ্রাম (টিওঅ্যান্ডই) অনুসরণপূর্বক ইউজিসির অনুমোদিত পদে যুগোপযোগী নীতিমালার আলোকে নিয়োগ ও পদোন্নতির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রার্থীগণের আবেদনের প্রেক্ষিতে সকল আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করে আবেদনের শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে যোগ্যতম প্রার্থীকে ইন্টারভিউ কার্ড প্রদান করা হয়েছে।
সেখানে ১৮ সেপ্টেম্বর “যবিপ্রবিতে অধ্যাপক পদে ‘পছন্দের প্রার্থীকে’ নিয়োগ দিতে নতুন নীতিমালা” শীর্ষক শিরোনামে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তা মোটেই তথ্যনির্ভর নয়। যবিপ্রবি প্রশাসন এ ধরনের অসত্য ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছে। এ ধরনের অপপ্রচার যবিপ্রবির প্রশাসনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হেয় করা নামান্তর এবং এ ধরনের অসত্য সংবাদ সাংবাদিকতার নীতিরও পরিপন্থি।
যবিপ্রবি প্রশাসন নিয়োগ, পদোন্নতি, একাডেমিক কার্যক্রম, গবেষণা ও সকল বিষয় একই সাথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে এধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার কুচক্রি ও স্বার্থান্বেষী মহলের কাজ যারা নিজেদের হীন স্বার্থে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে পশ্চাৎপদ ও অস্থিতিশীল রাখতে সর্বদা তৎপর। যবিপ্রবি প্রশাসন যেকোনো ঘটনার গঠনমূলক সমালোচনা ও সঠিক তথ্য প্রকাশের ব্যাপারে সবসময় আন্তরিক।
গঠনমূলক সমালোচনা ও সঠিক তথ্যের প্রকাশ প্রশাসনের কাজকে গতিশীল ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। কিন্তু অমূলক, ভিত্তিহীন, মিথ্যা ঘটনা প্রকাশ ও মিথ্যা গল্প বানিয়ে প্রশাসনকে হেয় করা কখনোই সমীচীন নয়।
এ ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের সুনাম যেমন ক্ষুণ্ন করে একইসাথে প্রতিষ্ঠানের বিষয়েও সাধারণ মানুষ সঠিক তথ্য না জানার কারণে বিভ্রান্তির স্বীকার হয়। আমরা যবিপ্রবি প্রশাসন সবসময় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই। এক্ষেত্রে সাংবাদিকবৃন্দসহ সকলের সহযোগিতা কাম্য।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন