শীত আসছে

ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে প্রকৃতি। ঘর থেকে বাইরে বের হলে গা শিউরে ওঠে। কারণ শীত এসেছে। ভোরের শিশির সূর্যের আলোতে মুক্তার মতো আলো ছড়িয়ে জানান দিচ্ছে, আসছে শীত। কুয়াশামাখা প্রকৃতি আর মাঠে মাঠে ফসলের সম্ভাবনার ঘ্রাণ, কৃষকের চোখে-মুখে আনন্দের রেখা।

মাকড়সার জালে আটকা শিশিরমাখা ভোরের একরাশ সজীব স্বপ্ন নিয়ে প্রকৃতি এখন মানুষকে কাছে টানছে। উৎসব আর আনন্দের মাঝে নিমগ্ন খেটে খাওয়া মানুষ। এমন সময় প্রকৃতি দূর করে শীত এনে দেয় শত কষ্টের গ্লানি। শীত কারো ভালো লাগা আর কারো কাছে কষ্টের।

ভোরবেলা মাঠে ময়দানে ঘুরে দেখা যায়, বাঁশঝাড় বা গাছের আড়াল থেকে ভোরের সূর্য হালকা লালচে রঙে দিচ্ছে ঝিলিক। কুয়াশার প্রতিটি মাকড়সার জালে আটকা পরে সূর্যের কিরণে মুক্তা মালার মতো জ্বলে। গ্রীষ্ম আর শীতের মধ্যে হেমন্ত যেন অপরূপ এক সেতুবন্ধন। কার্তিকের মাঝামাঝি সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত শীতল হাওয়া আর বিকেলে ঝরতে থাকা ধুসর কুয়াশা।

উত্তরের জনপদ গাইবান্ধায় শীত কড়া নাড়ছে দুয়ারে দুয়ারে। মাঠে-প্রান্তরে ভোরবেলা শিশিরমাখা ধানের ডগা জানান দিচ্ছে ফসলের সম্ভাবনার বার্তা। গেছে কুয়াশার কণায়।

প্রবীণ নাট্যকার ও সাংবাদিক অমিতাদ দাশ হিমুন জানান, উত্তরের জেলাগুলোতে শীত উপলব্ধি করা যাচ্ছে। কয়েক দিন থেকে ভোরে ফ্যানের প্রয়োজন হচ্ছে না। শীত শিরশির করে দরজায় কড়া নাড়ছে।

লেখক ও কবি গোবিন্দ লাল দাশ জানান, ভোরবেলা দুর্বা ঘাসে শিশির দেখা। মাঠে মাঠে ফসলের ক্ষেত ভোরের কুয়াশায় ঢেকে যায়। শীত আসছে তাই আর এখন রাতে বৈদ্যুতিক ফ্যান চালাতে হয় না।

কবি প্রতীক ওমর জানান, প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। শীত মানেই উৎসব। যেন পিঠা আর জামাই মেলা নিয়ে আসে শীতকাল। শীত না এলে কবিতা পূর্ণতা পায় না। তাই কবিতায় মিশে আছে শীতের শত ভাবনা।

কবি আব্দুল হাদী জানান, আবহাওয়া আর জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে এখন শীত ভাদ্রের মাঝেই উপলব্ধি করা যাচ্ছে। ভোর রাতে কাঁথা কম্বল গায়ে দিতে হয়। তাই বোঝা যায় শীত বেশি দূরে নেই। শীতের সাথে মিশে আছে শত শত কবিতার প্রাণ।

বগুড়া আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসাইনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত কয়েক দিন থেকে ভোরবেলা হালকা কুয়াশা দেখা যাচ্ছে।

কার্তিক মাসের দিন যত যাচ্ছে; শীতের আগমন তত উপলব্ধি হচ্ছে। শীতের তীব্রতা কম বা বেশি হওয়ার বিষয়টি আরও মাসখানেক পরে নির্ণয় করা যাবে।