শ্যামপুরে ভাইয়ের মৃত্যুর পর ভাবিকে হত্যার অভিযোগ
ছয় মাস আগে অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যান আবুল কাশেম সেলিম। মৃত্যুর পর তার তিন শিশু সন্তান তাফহিম হাসান সিয়াম, মুশফিকা কাশেম সাবা ও তোহিদ হাসান সাফাতকে আগলে রেখেছিলেন মা নাজমা আক্তার।
কিন্তু তাকে মেরে ফেলাতে । এতিম হয়ে গেছে তাদের তিন সন্তান। নাজমাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার দেবর আবুল কালাম আজাদ সেন্টুর বিরুদ্ধে। নাস্তা তৈরির সময় ভাবিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন তিনি।
এর নেপথ্যে কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে সেন্টুর দুই বোন ও এক ভগ্নীপতির কু-পরামর্শ। অভিযোগকারী নিহত নাজমার অপর দুই দেবর নেসার আহাম্মেদ ও নাসির আহমেদ।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে শনিবার (৪ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্যামপুরের আইসি গেট এলাকার একটি বাসায়। পরে স্বজনরা গুরুতর আহত অবস্থায় নাজমাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সকাল ১১টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, ৬ মাস আগে কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত আবুল কাশেম সেলিম (নাজমার স্বামী) মারা যান। সিয়াম-সাবা-সাফাত বাবা হারানোর শোক বুলতে না ভুলতেই হত্যা করা হলো তাদের মাকে। নাজমার দেবর নেসার ও নাসির জানান, ৫ ভাই, ৪ বোনের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন সেলিম। ঘাতক সেন্টু তৃতীয়।
কয়েক বছর আগে তাদের বাবা আবুল হাসেম মারা যান। পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে শ্যামপুর আইজি গেটের তিনতলা বাড়ির পাশাপাশি রাজধানীতে তাদের কয়েকটি দোকান রয়েছে। এসব সম্পত্তি এখনও ভাগাভাগি হয়নি। তাই সবাই একই বাড়িতে যৌথ পরিবার হিসেবে বসবাস করে আসছেন।
সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফেরেন সেন্টু। এরপর থেকে তাদের এক বোন জামাই তাকে পৈত্রিক সম্পত্তির ব্যাপারে প্রবাহিত করতে কু-পরামর্শ দিতেন। এ কারণে সেন্টু প্রায়ই তাদের ভাবি নাজমাসহ অন্যান্যদের সঙ্গে বাজে আচরণ-গালাগালি করতেন। পারিবারিক আরও বিভিন্ন ঝামেলা ও বোন জামাইর পরামর্শে প্রভাবিত হয়ে নাজমাকে হত্যা করেন সেন্টু। ঘটনার পরপরই তাকে আটক করেছে পুলিশ।
নাজমার তিন সন্তানের একজন সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। মেজ সন্তান পঞ্চম ও ছোট সন্তান বাসায় পড়াশোনা করেন। তাদের চাচারা আরও জানান, বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার ভাতিজা-ভাতিজিদের জন্য তাদের মা ছিল। এখন তিনিও নেই। তাদের ছোট ভাতিজা মা-মা করে চিৎকার করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ছে। বড় দুই সন্তানও মায়ের শোকে কাতর। তাদের দেখার এখন কেউ নেই। এতিম সন্তানদের কান্নাকাটি কে থামাবে, প্রশ্ন করেন তারা।
এদিকে নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শ্যামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল আলম। রোববার (৫ জুন) নিহতের ময়নাতদন্ত করা হবে। নাজমার বুকে ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। সেন্টু আপাতত পুলিশ হেফাজতে আছে।
ওসি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি দীর্ঘদিন ধরে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে তাদের পারিবারিক কলহ চলছিল। এ কারণেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটতে পারে। তবুও আমরা বিস্তারিত তদন্ত করে দেখছি। যে মামলাটি প্রক্রিয়াধীন, তার আসামি আপাতত একজন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন