শ্রীলঙ্কার সিরিজ জয়, না টাইগারদের ঘুরে দাঁড়ানো?
পরাজয়ের বৃত্তে ঘুরতে থাকা হত-বিধ্বস্ত একটি দল হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিল শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে বাংলাদেশ ছিল ঘরের মাঠে প্রায় অপরাজেয় হয়ে ওঠার গৌরব নিয়ে। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ৩ ম্যাচে জিতে বছরটা ভালোভাবে শুরুরই ইঙ্গিত দিয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু, বিধি বাম! পরের ম্যাচ থেকেই বদলে যায় ছক। বদলে যায় শ্রীলঙ্কাও। নতুন কোচ হাথুরুসিংহের নেতৃত্বে যেন হারের বৃত্ত থেকে বের হতে শুরু করে লঙ্কানরা। অন্যদিকে জয় ক্রমশই অধরা হতে থাকে টাইগারদের। ত্রিদেশীয় সিরেজের পর টেস্ট সিরিজে হার, এবার প্রথম টি-টুয়েন্টি হেরে দুই ম্যাচের এই সিরিজটিতেও হারের শঙ্কায় পড়েছে টাইগাররা। আর হাথুরুর হাতে বদলে যাওয়া শ্রীলঙ্কা ফিরে পাচ্ছে সেই কাঙ্খিত ‘মোমেন্টাম’, যার অপেক্ষায় এতদিন ছিল তারা।
ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের সেরা অস্ত্র বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে হারিয়ে বড় হোঁচটটা খায় বাংলাদেশ। টি-টুয়েন্টিতে প্রথম ম্যাচে ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। তবে, বৃহস্পতিবার মিরপুরে দলে ফেরা সৌম্য সরকার ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীমের দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরি, সাথে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লার ঝড়ো ইনিংসের ওপর ভর দিয়ে এ সংস্করণে নিজেদের সর্বোচ্চ রান ১৯৩ করে বাংলাদেশ। এদিন সৌম্য করেন এ সংস্করণের নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। অন্যদিকে মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৬৬ রানে। আর ৩১ বলে মাহমুদউল্লাহ করেছেন ৪৩ রান।
কিন্তু বোলারদের ব্যর্থতায় ম্যাচটি হারতে হল বাংলাদেশকে। সঠিক লাইন ও লেঙথে বল ফেলতে না পারাকেই ম্যাচ হারের কারণ হিসেবে সেদিন চিহ্নিত করেছিলেন অধিনায়ক, সাথে আরো কিছু রানের আক্ষেপও ছিল তার। তবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টুয়েন্টি জিতে মৌসুমটা ভালোভাবে শেষ করার প্রত্যয়ও ছিল মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠে।
অন্যদিকে ২০১৭ সালটা অনেকটা জঘন্যই ছিল লঙ্কান ক্রিকেটের জন্য। ভারতের কাছে কিছুদিন আগেই সব সংস্করণে ক্রিকেটে হেরেছে তারা। তার আগে জিম্বাবুয়ের কাছে দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ হার। বাংলাদেশের কাছে পরে দেশের মাটিতে টেস্ট হার। সাথে ছিলে ইনজুরির ধারাবাহিক সমস্যা। সব মিলিয়ে লঙ্কান মিডিয়াই বলছিল, এই শ্রীলঙ্কা তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে সময় পার করছে। যেখানে প্রেরণার বড় অভাব। ভবিষ্যৎও তাই অন্ধকার দেখছিল তারা।
সেই শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশে এসেই আমূল বদলে গেল। নিয়মিত অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলা ম্যাথুজকে ছাড়াই পুরো সফরে ব্যাটে-বলে দারুণ নৈপূণ্য দেখালো হাথুরুর নতুন শিষ্যরা। ইনজুরির জন্য প্রথম টি-টুয়েন্টিতে ছিলেন না কুশল পেরেরা, অ্যাসেলা গুনারত্নেও। তবু এ সংস্করণে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয় পেতে কোন অসুবিধা হয়নি সফরকারীদের। বরং ২০ বল বাকি থাকতেই প্রয়োজনীয় ১৯৪ রান তুলে নেয় লঙ্কানরা, হাতে ছিল ৬ উইকেট।
রোববার সিলেটে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় সিরিজের শেষ টি-টুয়েন্টি ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। সিরিজ নির্ধারণী এই ম্যাচ জিতে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বাংলাদেশ? নাকি শেষ ম্যাচেও জয় তুলে ‘মোমেন্টাম’এর বৃত্ত পূর্ণ করে দেশে ফিরবে শ্রীলঙ্কা?
সূত্র: আইসিসি-ক্রিকেট
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন