সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না নির্বাচন কমিশন : সুজন
নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না মন্তব্য করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি হাফিজ উদ্দিন বলেছেন, ‘তিন সিটি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেখা যাচ্ছে না।’ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুজনের আয়োজনে ‘অবাধ নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই’ শীর্ষক রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনকে সরকারের সাথে বোঝাপড়া করা উচিত। যদি সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়া যায়, তবে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের দায় কে নেবে? সেজন্য আগেই নির্বাচন কমিশনারকে নির্বাচন আয়োজনে অপারগতা প্রকাশ করা উচিত।’
সুজনের সভাপতি হাফিজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।
দিলীপ বলেন, ‘শুরু থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেও আমরা লক্ষ্য করছি যে, নির্বাচনের মাঠ ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা সত্ত্বেও গ্রেফতার হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। প্রথম দিক থেকে মামলা শুরু হয়েছে রাজশাহীতে। এখন সিলেটেও মামলা, গ্রেফতার ও হয়রানি শুরু হয়েছে। রাজশাহীতে পথসভায় ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে এবং এ নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। সিলেট নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং থানা থেকে আটক নেতাকর্মীদের ছাড়িয়ে আনার জন্য মেয়রপ্রার্থীকে থানার সামনে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। বরিশালে নাশকতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা বাহিনী। এ ঘটনাগুলো ভোটারদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়গুলো আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে একজন সিটি মেয়র ও কয়েকজন সংসদ সদস্যকে আচরণবিধি ভঙ্গ করে প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় নামতে দেখা গেছে। প্রচারণায় অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, সিভিল সার্জন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারসহ অসংখ্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। একটি সিটিতে প্রচারণায় নেমেছে নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন। প্রত্যেক সিটিতে প্রথম থেকে পক্ষে মিছিল করছে প্রার্থীরা। এসব আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটারদের আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে।’
দিলীপ আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও রংপুর সিটি নির্বাচনে কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। তা ধরে রাখতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনকে বিবেচনায় রাখতে হবে যে, কয়েক মাসের মধ্যে আমাদের জাতীয় নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচন সম্ভবত সর্বশেষ বড় নির্বাচন। সংগত কারণেই সারা দেশের সচেতন নাগরিকদের দৃষ্টি থাকবে এই নির্বাচনের দিকে।’
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে জনগণের কাছে একাদশ জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা দেবে। আর এই তিন সিটি নির্বাচন যদি খুলনা-গাজীপুরের মতো প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তবে তা জনগণকে নেতিবাচক বার্তা দেবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন