‘সত্যিকারের নৌকা, ধানের শীষ নিয়ে প্রচার আর চলবে না’
ভোটের প্রচারে প্রতীকের ব্যবহার নিয়ে নির্বাচন কমিশন এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যার ফলে বিএনপির কর্মীরা এখন থেকে ক্ষেত থেকে ধানের শীষ কেটে এনে আর প্রচার চালাতে পারবেন না। দলটির নেতা-কর্মীদেরকে প্রচারে নামতে হবে প্লাস্টিকে তৈরি ধানের শীষ ব্যবহার করে।
একইভাবে আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী প্রচারে সত্যিকারের নৌকা নিয়ে আসতে পারবে না। তবে তারা নৌকার আদলে তৈরি প্রতিকৃতি ব্যবহার করা যাবে।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে এক বৈঠক শেষে এই বিষয়টি জানান নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ।
নানা সময় নির্বাচনী প্রচারে বিএনপির কর্মী সমর্থকরা ক্ষেত থেকে ধানের শীষ কেটে এনে প্রচারে অংশ নেন। দলের নেতারাও কোনো এলাকায় সফরে গেলে তাদের হাতে এই প্রতীক দেয়া হয়।
তবে নির্বাচন কমিশন সচিব বলেন, ‘এখন থেকে কেউ প্রতীকের প্রতিকৃতি ব্যতীত অন্য কিছু ব্যবহার করে প্রচারণা চালাতে পারবে না।’
সচিব বলেন, ‘আগে ছিল জীবন্ত কোনও কিছু নিয়ে প্রচারণা করা যাবে না। যেমন হাতি, ঘোড়া ইত্যাদি, সেখানে এখন বলা হয়েছে, প্রতিকৃতি ব্যতিত অন্য কিছু নিয়ে প্রচারণা করা যাবে না।’
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালে জীবন্ত প্রাণী নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেয়।
এর আগ পর্যন্ত হাতি, ঘোড়া, ময়ূর বা গোরগ মার্কার প্রার্থীরা এসব প্রাণী নিয়ে মিছিল বের করতেন। কিন্তু সাত বছর ধরে এসব বন্ধ হয়ে গেছে।
নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের ক্ষেত্রে কী হবে? এর তো কোনা প্রতিকৃতি নেই- এমন প্রশ্নে নির্বাচন কমিশন সচিবের সুস্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি কোনও জবাব না দিয়ে তার বক্তব্য শেষ করেন।
সচিব জানান, সিটি করপোরেশন আচরণ বিধিমালায় ১১টি বিষয়ে সংশোধনের প্রস্তাবে সায় দেয়া হয়েছে। বিধিমালাটি জারি হলে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ দিনের দাবি অনুযায়ী সিটি নির্বাচনের প্রচারে সংসদ সদস্যরা অংশ নিতে পারবেন।
২০১৫ সালে কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেয়। তবে গত ১২ এপ্রিল আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল আইন সংশোধন করে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানায়।
নির্বাচন কমিশনের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেয়র প্রার্থীরা এখন থেকে প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে নির্বাচনী ক্যাম্প করতে পারবেন। আগে এটা ছিল, প্রতি থানায় একটি।
সংশোধিত বিধিমালাটি ভেটিং বা আইনি পরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। সেখানে যাচাই বাছাই শেষে পরিপত্র জারি হলে নতুন বিধিমালা কার্যকর হবে।
নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এই নির্বাচনকমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ। এদের কোনো যোগ্যতা নেই যা কিছু করছে বিরোধী দলকে ঠেকানোর জন্যই করছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন