সবার জন্য সবুজ আগামীর লক্ষ্যে এবছর ৫০ লাখ চারা বিতরণ শুরু করলো ‘বনায়ন’ কর্মসূচি
গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’ — বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩ এ বন অধিদপ্তরের এই প্রতিপাদ্য’কে সামনে রেখে দেশজুড়ে চারা বিতরণ কর্মসূচি শুরু করেছে দেশের বেসরকারি খাত পরিচালিত সর্ববৃহৎ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ‘বনায়ন’
[ঢাকা, ৫ জুন, ২০২৩] সবাইকে সবুজ পৃথিবীর গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে। প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সবাইকে টেকসই জীবনযাপনের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে এবং এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা শুরু হয়। এই লক্ষ্যের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারও এগিয়ে এসেছে এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ সরকারের সাথে একযোগে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করছে দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ‘বনায়ন’। এ উপলক্ষ্যে ২০২৩ সালে বনায়ন ৫০ লাখ গাছের চারা বিতরণ করবে। পরিবেশ রক্ষায় বনায়ন উদ্যোগের এই যাত্রার ৪৩ বছর পূর্ণ হচ্ছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে। এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য দেশজুড়ে ১৮টির বেশি নার্সারিতে এই চারাগুলো তৈরি করা হয়েছে।
বন বিভাগের দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৮০ সালে বনায়ন প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় অবদান রাখতে এই কার্যক্রমের আওতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষক ও অংশীজনদের এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ কোটি বনজ, ফলজ ও ঔষধি জাতীয় গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এই কর্মকান্ডকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কৃষকদের সহযোগিতায় ‘বনায়ন’ ১১৯টির অধিক ঔষধি বাগান তৈরী করেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি—১৫ (স্থলজ জীবন) অর্জনে সরাসরি অবদান রাখছে বনায়ন। এছাড়া, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের মোট ভূমির ২৫ শতাংশ বৃক্ষ দ্বারা আচ্ছাদনে বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে এই উদ্যোগ।
বর্তমানে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রংপুর, রাজশাহী, লালমনিরহাট, নাটোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, যশোর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও নোয়াখালী (ভাসানচর) সহ দেশজুড়ে ২২টি’রও বেশি জেলায় পরিচালিত হচ্ছে ‘বনায়ন’ প্রকল্পের কার্যক্রম।
বিগত বছরগুলোতে জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও সামগ্রিকভাবে বাস্তুসংস্থানের উন্নয়নে অবদান রাখার কারণে ‘বনায়ন’ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সম্মাননা ও স্বীকৃতি অর্জন করেছে। প্রকল্পটি পাঁচবার সম্মানসূচক প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার এবং একবার প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। পাশাপাশি, গ্রিন লিডারশিপের জন্য ‘এন্টারপ্রাইজ এশিয়া’ থেকে ‘বনায়ন’ অর্জন করেছে ‘এশিয়া রেসপন্সিবল অন্ট্রারপ্রনারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ এবং এসডিজি অন্তর্ভুক্তি শ্রেণিতে অর্জন করেছে ‘বাংলাদেশ ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২১’। এছাড়াও দেশজুড়ে বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ইতিবাচক প্রভাব রাখার জন্য স¤প্রতি এসডিজি ব্র্যান্ড চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ডস ২০২৩ —এ জলবায়ু ও পরিবেশ বিভাগে সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে বনায়ন।
বাস্তুসংস্থান পুনরুদ্ধারে নিজেদের প্রতিশ্রুতির সাথে সঙ্গতি রেখে এবং সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ‘বনায়ন’ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার, রাজশাহী সিটি করপোরেশন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অসংখ্য সরকারি—বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে।
‘বনায়ন’ তার পরিবেশবান্ধব কর্মকান্ডের মাধ্যমে সরকারের সাথে একযোগে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাস্তুসংস্থান পুনরুদ্ধার করে সকলের জন্য এক সবুজ আগামী বিনির্মানে কাজ করে যাচ্ছে ‘বনায়ন’।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন