সভাপতি না করায় মসজিদে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ
মসজিদ কমিটিতে সভাপতি না করায় মসজিদে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন ইউনিয়ন যুবদলের এক নেতা। এতে মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করতে কষ্ট হচ্ছে স্থানীয় মুসল্লিদের। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ঘটনাটি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের রুদ্রপুর জামে মসজিদের। যুবদলের ওই নেতার নাম আবু সামা।
তবে দীর্ঘ ৪০ বছরেও এ মসজিদের কোনো কমিটি গঠন না করে স্থানীয় আব্দুল হাই মাস্টার ও সাবেক ইউপি সদস্য কামাল হোসেন দুই ভাই মসজিদের অনুদানের অর্থগুলো হেরফের করছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন যুবদল নেতা আবু সামা।
গত দুই মাস আগে রুদ্রপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে কোনো সমাধান হয়নি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রুদ্রপুর গ্রামের জামে মসজিদে দীর্ঘদিন ৪০ বছর যাবত গ্রামের শতশত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা নিয়মিত নামাজ আদায় করে আসছিলেন। এ মসজিদে যাতায়াতের জন্য সরকারিভাবে কোনো রাস্তা নেই। বাড়ির উপর দিয়েই রয়েছে যাতায়াতের একমাত্র পথ। তারপরও মুসল্লিরা কষ্ট সহ্য করে নিয়মিত নামাজ আদায় করছিলেন।
স্থানীয় আবু সামা ও মোয়াজ্জেম হোসেন মসজিদে যাতায়াতের পথটিকে আরও সহজ করার জন্য তাদের পক্ষ থেকে রিকশা-ভ্যান যাওয়ার মতো জায়গা নির্ধারণ করে প্রায় তিন ডিসিমাল জায়গা মসজিদের জন্য দান করেন। দীর্ঘ ৪০ বছরেও এই মসজিদটিতে কোনো কমিটি নেই। সাবেক ইউপি সদস্য কামাল হোসেন ও তার বড় ভাই আব্দুল হাই মাস্টার এই মসজিদটি পরিচালনা করছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠলেও তারা কোনো কিছুর তোয়াক্কা করেননি।
প্রায় দুই মাস আগে এই মসজিদটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য রুদ্রপুরের বাসিন্দা ও চান্দাইকোনা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আবু সামা গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে কমিটি গঠনের জন্য চাপ দেন এবং তাকে মসজিদ কমিটির সভাপতির পদ দেয়ার প্রস্তাব দেন।
এ নিয়েই চলছিল রশি টানাটানি। শেষ পর্যন্ত আবু সামাকে সভাপতির পদ দিতে অস্বীকৃতি জানায় ওই গ্রুপের লোকজন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাড়ির উপর দিয়ে মসজিদে যাতায়াতের একমাত্র পথ বন্ধ করে দেন আবু সামা।
শেষ পর্যন্ত একটি পুকুরের উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন গ্রামবাসী। কিন্তু রাতের বেলায় নামাজ পড়তে গিয়ে পুকুরে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সরাসরি যাতায়াতের ভালো রাস্তা না থাকায় বয়স্ক ও বৃদ্ধ মানুষেরা চরম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় মুসল্লিরা।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ও রুদ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আবু সামা অভিযোগুলো অস্বীকার করে বলেন, মসজিদ-মাদরাসা নিয়ে আমার সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। মসজিদে যাতায়াতের জন্য আমি আমার চাচা মোয়াজ্জেম হোসেনকে জায়গা দিয়েছি। খুব শিগগিরই ওই জায়গা মসজিদের নামে রেজিস্ট্রিও করে দেব।
এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য শারিফুল ইসলাম বলেন, মসজিদে যাতায়াতের জন্য কোনো রাস্তা বন্ধ করা হয়নি। মসজিদে যাতায়াতের জন্য রাস্তাটিতে ইতোমধ্যে ১২ ট্রাক মাটি ফেলা হয়েছে। তবে মসজিদের কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চান্দাইকোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল হান্নান খান বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কেউ অবগত করেননি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল আখতার জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে খুব দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন