সমরশক্তি দেখাল চীন
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উপস্থিতিতে রোববার দেশটিতে বৃহত্তম সামরিক প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার লাগাম টেনে ধরতে বেইজিং ব্যর্থ হচ্ছে- ট্রাম্পের এমন সমালোচনার কয়েক ঘণ্টা পরেই বৃহত্তম এ সমরাস্ত্র প্রদর্শনী করেছে চীন।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ৯০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর কুচকাওয়াজের অংশ ছিল এটি। একে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সামরিক সক্ষমতার একটা প্রদর্শনী বলে মনে করা হচ্ছে।
এ অনুষ্ঠানে এক বক্তব্যে জিনপিং বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী হবে ‘বিশ্বমানের’, যারা যেকোনো আক্রমণকারীর হামলাকে প্রতিহত করতে সক্ষম। খবর সিএনএন ও এএফপির।
এর আগে চীনে এ ধরনের সামরিক মহড়াগুলো রাজধানী বেইজিংয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে প্রকাশ্যে প্রদর্শিত হতো। কিন্তু এবার সেটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ইনার মঙ্গোলিয়ার প্রত্যন্ত ঝুরিহি সামরিক ঘাঁটিতে আয়োজন করা হয়। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল রেন গুয়োকিয়াং বলেন, ‘ঝুরিহি হল মরুভূমির মধ্যে অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি। পিএলএ’র সামরিক প্রস্তুতি প্রদর্শনীর জন্য এ স্থানকে বেছে নেয়া হয়েছে।’
উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে তিনি বলেন, এ অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা কিছুই করছি না। শুক্রবার উত্তর কোরিয়া এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালালে তার নিন্দা জানায় চীন। নিন্দার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকায় চীনের সমালোচনা করে টুইট করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, চীনের কর্মকাণ্ডে আমি হতাশ হয়েছি।
প্রেসিডেন্ট জিনপিং রোববার জিপে চড়ে বৃহত্তম সামরিক মহড়া প্রদর্শন করেন। চীনের রয়েছে ২৩ লাখ সেনা সদস্য। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, প্রায় ১২ হাজার সেনা, ১২৯টি যুদ্ধবিমান ও ৬০০টি সামরিক সরঞ্জাম এদিনের অনুষ্ঠানে শক্তি প্রদর্শন করে। এছাড়া, দূরপাল্লার পরমাণু ও প্রথাগত মিসাইল ছাড়াও জে-১৫ এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার প্রদর্শিত হয় এ মহড়ায়। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল নতুন জেনারেশনের স্টিলথ ফাইটার জে-২০ এর প্রদর্শনী, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর এফ-২২ অথবা এফ-৩৫ এর সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী।
এক বিবৃতিতে হংকংয়ের লিংনান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ঝাং বাওহুই বলেন, জে-২০ এর প্রদর্শনী ছিল পরীক্ষামূলক। প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে চীনের বিমানবাহিনীকে শক্তিশালী করতে এগুলো বাহিনীতে সংযুক্ত করা হবে। তিনি জানান, পিএলএ’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ২০০৯ সালে উপস্থাপিত হওয়া ডিএফ-৩১এ মোবাইল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইলের উন্নত সংস্করণ ডিএফ-৩১এজি এরও প্রদর্শনী করেছে চীন।
এ অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত ভাষণে জিনপিং সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন এবং কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আনুগত্য অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি চাই আমাদের সেনাবাহিনী হবে ‘বিশ্বমানের’, যারা আক্রমণকারী যে কোনো শত্রুকে পরাজিত করতে সক্ষম হবে। তাদের উচিত হবে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নির্দেশকে কঠোরভাবে মেনে চলা। যেদিকে দল নির্দেশ করবে, সেদিকেই মার্চ করতে করতে এগিয়ে যেতে হবে সেনাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের সাহসী সেনাদের যে কোনো আক্রমণকারীকে নাস্তানাবুদ করার ক্ষমতা রয়েছে। দেশের জাতীয় সার্বভৌম, নিরাপত্তা ও স্বার্থ সুরক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সেনাবাহিনীর শক্তি ও যোগ্যতা দুটোই রয়েছে। জিনপিং বলেন, ‘বিশ্ব এখন শান্তিতে নেই। শান্তিকে সুরক্ষিত করতে হবে। আজ আমরা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে চীনের মহান পুনর্জাগরণের লক্ষ্যে পৌঁছাতে যাচ্ছি। এ জন্য আমাদের আরও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন