সম্পত্তি না দেয়ায় মায়ের হাত ও দাঁত ভেঙে দিয়েছে ছেলে ও বউ
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় আম্বিয়া খাতুন নামে এক মায়ের হাত এবং দাঁত ভেঙে দিয়েছে তার নিজের ছেলে ও ছেলের বউ। বুধবার দুপুরে উপজেলার মসুয়া ইউনিয়নের চারালদিয়া এ ঘটনা ঘটে।
আহত আম্বিয়া খাতুন (৫৮) ওই গ্রামের মৃত আ. বাতেনের স্ত্রী।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আম্বিয়া খাতুন বলেন, আমার এক ছেলে হাবিবুর রহমান আলম (৪০) ও তিন মেয়ে রয়েছে। দুই মেয়ের বিয়ে দিলেও ছোট মেয়ে মরিয়ম এখনও অবিবাহিত। আলমকে সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য সে প্রায়ই আমাকে ও আমার ছোট মেয়েকে অত্যাচার এবং নির্যাতন করত। মরিয়ম তার ভাইয়ের অত্যাচারে আরেক বোনের বাড়ি গিয়ে থাকে। আমাকেও সে পৃথক করে দিয়েছে।
ঘটনার দিন বুধবার ঝড়ের সময় দরজা বন্ধ করে আম্বিয়া খাতুন একা ঘরে বসেছিলাম। এমন সময় পুত্রবধূ মাহমুদা আক্তার (৩৫) পাশের ঘর থেকে আমার ঘরে আসতে চাইলে ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় বৃষ্টির পানিতে সামান্য ভিজে যায়।
ঘরের দরজা বন্ধ কেন এমন অজুহাতে চিৎকার শুরু করে সে। এ সময় ছেলে আলম তার স্ত্রীর চিৎকার শুনে লাঠি এনে আমাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। এতে আমার ডান হাত ও কয়েকটি দাঁত ভেঙে যায়। লাঠির আঘাতে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মাহমুদা আক্তার দা দিয়ে আমার মাথায় কোপ দিয়ে মারাত্মক জখম করে। পরে প্রতিবেশীরা আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। এদিকে এ ঘটনায় মামলা করলে হত্যার হুমকি দিচ্ছে ছেলে ও তার স্ত্রী।
আম্বিয়া আরও জানান, ১৯৯৫ সালে তার স্বামী মারা যায়। স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলে বিদেশে যায়। মেয়েদের নিয়ে সংসার ভালোই চলছিল। ইতিমধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে দেন এবং ২০০৭ সালে ছেলেকে বিয়ে দেন। বিয়ের কিছু দিন পর ছেলে আবার বিদেশে চলে যায়। কিন্তু সে আর মায়ের খোঁজখবর নেয় না। এক বছর আগে ছেলে দেশে আসে। তার পর থেকেই সম্পত্তি লিখে নেয়ার জন্য তার ওপর নানারকম নির্যাতন শুরু করে। জমির ফসলও সে ভোগ করে। ভরণপোষণ তো দেয়ই না বরং বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে তার মাকে। লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি তিনি এতদিন কাউকে জানাননি।
বাড়ি ছেড়ে না যাওয়ায় বুধবার দুপুরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার জন্য তার ওপর নির্যাতন চালায়। ছোট মেয়ে ভয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে আসে না। বাড়ি এলে তাকেও মারধর করে। এ কারণে ঢাকায় তার বোনের বাড়ি থেকে লেখাপড়া করে সে।
এদিকে নির্যাতনে মা গুরুতর আহত হওয়ার কথা শুনে ঢাকা থেকে হাসপাতালে আসেন ছোট মেয়ে মরিয়ম আক্তার।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আলী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তাসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
কটিয়াদী থানার ওসি জাকির রব্বানী বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন